বঙ্গ বিজেপির সভাপতির পদ হাতছাড়া হওয়ার পর প্রথমবার মুখ খুললেন দিলীপ ঘোষ। নয়া রাজ্য সভাপতিকে শুভেচ্ছা টুইটারে সংক্ষিপ্ত বার্তায় বললেন, ‘ভারতীয় নতুন রাজ্য সভাপতি হিসেবে ডঃ সুকান্ত মজুমদারকে অভিনন্দন জানাই এবং তার সাফল্য কামনা করি|’
এমনিতে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে 'রাজ্য সভাপতি হিসেবে দিলীপের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিধানসভা ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পর দিলীপের বিরুদ্ধে বিজেপি অভ্যন্তরে ক্ষোভের মাত্রা বাড়তে থাকে। অনেকেই দাবি করতে থাকেন, দিলীপ যে ধরনের ভাষা প্রয়োগ করেন, তাতে শহুরে ভোটারদের একটা বড় অংশ বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পা চোটের পর ‘হাফপ্যান্ট’-সহ বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্য করে আখেরে বিজেপিকে বিপদে ঠেলে দিয়েছেন। সেইসঙ্গে তাঁরা দাবি করেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে আকাশকুসুম স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন দিলীপ। যদিও দিলীপ অনুগামীদের দাবি ছিল, দিলীপের হাত ধরেই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সাংসদ সংখ্যা দুই থেকে বেড়ে ১৮ হয়েছে। বিধানসভায় আসন সংখ্যা তিন থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৭। তখনও দিলীপের ভাষা একইরকম ছিল। তাহলে এখন কেন দোষারোপ করা হচ্ছে?
সেই টানাপোড়েনের মধ্যেই রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, গত ২ মে বিধানসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ক্ষোভের মুখে পড়েছেন দিলীপ। দলের অন্দরেও 'দিলীপ হটাও' দাবি জোরালো হতে থাকে। তার জেরেই দিলীপকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেই সময় দিলীপের সমর্থনে যাঁরা এগিয়ে এসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বালুরঘাটের সাংসদ। সেই সুকান্তকেই নয়া রাজ্য সভাপতি করা হয়েছে।
কিন্তু তুলনামূলকভাবে লো-প্রোফাইল সুকান্তকে এত বড় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে? তাতে একাধিক কারণ উঠে এসেছে। প্রথমত, দীর্ঘদিনের রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘে ছিলেন সুকান্ত। তাই 'আরএসএস ম্যান' দিলীপের পরিবর্তে তাঁকে আনা হয়েছে। সংঘের ভোট ছিল তাঁর দিকে। দ্বিতীয়ত, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপিকে ঝাঁপি উজাড় করে দিয়েছে উত্তরবঙ্গ। এবারের বিধানসভা ভোটেও উত্তরবঙ্গে ভালো ফল করেছে বিজেপি। ফলে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের দিকে পাখির চোখ করে উত্তরবঙ্গের এক প্রতিনিধি রাজ্য সংগঠনের শীর্ষ পদে বসিয়ে বিশেষ বার্তা দিল বিজেপি।