গত রবিবার নদিয়ার হাঁসখালিতে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল কয়েকজনের। সেই ঘটনায় দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সকলেই শোকপ্রকাশ করেছিলেন। বাদ যাননি রাজ্যপালও। তিনি পথ দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সরকারকে আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছিলেন। এরপরেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপার, জেলাশাসক, পূর্ত দফতরের আধিকারিক এবং পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেই বৈঠকে পথ দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয়েছিল। এবার পথ দুর্ঘটনা রুখতে তৎপর হল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন।
সাধারণত ট্র্যাফিক আইন ভঙ্গ করে গাড়ি চালালে সে ক্ষেত্রে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা জরিমানা হয়ে থাকে। কিন্তু, তারপরেও দেখা যায় ট্র্যাফিক নিয়ম ভঙ্গ করার প্রবণতা কমছে না। সেই কারণে জেলাশাসক স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, ট্র্যাফিক আইন ভঙ্গকারীদের শুধু জরিমানা করলেই হবে না। শাস্তি দিতে হবে, প্রয়োজনে আটক করতে হবে। এ নিয়ে জেলাশাসক জেলার পুলিশ সুপারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাতে ঠিক হয়েছে, ট্রাফিক আইনভঙ্গ করলে সে ক্ষেত্রে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার অধিকার হারানো তো বটেই বাতিল করা হতে পারে ড্রাইভিং লাইসেন্সও।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জেলার রাস্তাগুলোতে দ্রুতগতিতে গাড়ি - বাইক চালাতে দেখা যায় চালকদের। সে ক্ষেত্রে অধিকাংশ বাইক আরোহীকে দেখা যায় হেলমেট ছাড়া। আবার বাইককে তিনজন আরোহী নিয়েও রাস্তায় চলতে দেখা যায়। শুধু তাই নয়, ছোটো গাড়িতেও সিটবেল্ট বাঁধতে দেখা যায় না চালক এবং আরোহীদের। তার উপর তীব্র গতিতে চলে গাড়ি। এই পরিস্থিতিতে শনিবার থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কে নজরদারি চালাবে পুলিশ এবং আরটিও আধিকারিকরা । সেক্ষেত্রে ট্র্যাফিক আইনভঙ্গ করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত , পূর্ব মেদিনীপুরের শিল্পনগরী হলদিয়া এবং পর্যটন কেন্দ্র দিঘায় প্রতিনিয়ত হাজার-হাজার গাড়ি যাতায়াত করে। ফলে এই এলাকায় দুর্ঘটনা রুখতে শুধু যে গাড়িচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই হবে তা নয় , অসংখ্য মানুষকে দেখা যায় সড়কে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে। সে ক্ষেত্রে জাতীয় সড়কের লেনের উপর দিয়ে রাস্তা পার হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এর ফলে দুর্ঘটনা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে বলে মনে করছে জেলা প্রশাসন।