বিধানসভা নির্বাচনে মাঠে নেমে খাটতে তাঁকে দেখা যায়নি। বাড়িতে পদ্ম ফুটতেই নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। আগ বাড়িয়ে রাজ্যপালকে চিঠি লিখেছিলেন। তাও দলকে না জানিয়ে। হ্যাঁ, তিনি তমুলকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। যাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে রাজ্য কমিটিকে সুপারিশ করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই নন্দীগ্রামের বিধায়ককে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে ঘোষণা করেছে বিজেপি।
এই বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘জেলা নেতৃত্বের সুপারিশ রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। এবার তাঁরা যা সিদ্ধান্ত নেবেন।’ ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই অধিকারীদের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের সংঘাত শুরু হয়। তার ঠিক পরেই বিজেপিতে যোগ দেন ভাই সৌমেন্দু অধিকারী। আবার এগরায় অমিত শাহের জনসভায় হাজির হয়ে দলের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন বাবা শিশির অধিকারী। যিনি এখনও কাঁথি লোকসভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ।
এইসব যখন চলছে তখন সভা–সমাবেশ এবং সংগঠনের কাজে নিষ্ক্রিয় থেকেছেন দিব্যেন্দু অধিকারী। তিনিও ধরে নিয়েছিলেন এবার বাংলায় পদ্ম ফুটবে। তাই নিজের স্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রীর সভায় পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু বাংলায় পদ্ম ফোটা তো দূরঅস্ত চারিদিকে ঘাসফুল ফুটেছে। দিব্যেন্দুর এইসব কাণ্ডকাখানার পর এবার তাঁর বিরুদ্ধেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করলেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা।
যে রিপোর্ট রাজ্য নেতৃত্বের কাছে এসে পৌঁছেছে সেখানে ছত্রে ছত্রে দিব্যেদু অধিকারীর বিরুদ্ধে প্রমাণ–সহ তথ্য দেওয়া রয়েছে। যা অস্বীকার করতে পারবেন না স্বয়ং দিব্যেন্দুও। তাই দিব্যেন্দুর বিরুদ্ধে সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার অর্থ তাঁকে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বহিষ্কার করা। ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচন। এখন দিব্যেন্দুকে বহিষ্কার করলে তিনি সাংসদ থেকে যেতে পারবেন। সঙ্গে দলীয় কোনও হুইপ মানতেও বাধ্য থাকবেন না। তাই ২২ থেকে নেমে যাবে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে দিব্যেন্দুর বিরুদ্ধে ঠিক কী ব্যবস্থা নেওয়া এখন সেটাই দেখার।