জগতবল্লভপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতিতে এক রোগীর মৃত্যুর পর এক চিকিৎসককে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাটি তদন্ত করতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।
রোগী, রজু জেলে (৩৪), জ্বর এবং পেটের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার পরিবার অভিযোগ করে যে, সোমবার দুপুরে তিনি স্থিতিশীল ছিলেন কিন্তু চিকিৎসকের নির্দেশে এক নার্স ইনজেকশন দেওয়ার পর তার অবস্থার অবনতি হয়। রোগী অসুস্থ বোধ করতে থাকেন এবং শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকেন। রাতে তার মৃত্যু হয়।
রজু জেলের পরিবারের দাবি, ইনজেকশন দেওয়ার পরপরই তার শরীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তারা অভিযোগ করে যে, হাসপাতালের কর্মীদের অবহেলা এবং চিকিৎসার গাফিলতির ফলেই রজুর মৃত্যু হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে রোগীর আত্মীয়স্বজন এবং স্থানীয় মানুষজন হাসপাতালে এসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে শারীরিক ও মানসিকভাবে হয়রানি করেন।
এই পরিস্থিতিতে হাওড়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (সিএমওএইচ) কিশলয় দত্ত জানান, এই ঘটনার যথাযথ তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা ঘটনার সব দিক বিশ্লেষণ করে দেখবেন এবং তাদের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
কিশলয় দত্ত আরও জানান, রোগীর পরিবার এবং আত্মীয়দের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করছি, তবে কোনরকম অস্থিরতা বা সহিংস আচরণ কোন সমস্যার সমাধান করতে পারে না। আমরা তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করার চেষ্টা করছি এবং এই প্রক্রিয়ায় কোন অবহেলা বা গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
এদিকে হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা এই ঘটনার পর আতঙ্কিত এবং নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা দাবি করেছেন যে, হাসপাতালের কর্মীদের উপর এরকম হামলা বন্ধ করতে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
রোগীর মৃত্যু এবং চিকিৎসকের উপর হামলার ঘটনায় স্থানীয় মানুষজনের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ চিকিৎসা গাফিলতির জন্য হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন, আবার কেউ কেউ পরিস্থিতির সঠিক তদন্তের জন্য প্রশাসনের উপর আস্থা রেখেছেন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং রোগী ও তার পরিবারের সঙ্গে সংযোগ রেখে ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।