দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে ক্ষোভ ছড়িয়েছে রাজ্যে। ঘটনাটি ফের প্রশ্ন তুলেছে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিয়ে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় রিপোর্ট তলব করেছে স্বাস্থ্য ভবন। এবার এই ঘটনায় সরব হয়েছে চিকিৎসক সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম (ডব্লিউবিডিএফ)। সংস্থার পক্ষ থেকে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি পাঠিয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের সুরক্ষায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ। ছাত্রী ও ইন্টার্নদের বারবার নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে, অথচ প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষ নিষ্ক্রিয়।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুরে মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রীকে গণধর্ষণ হাসপাতালের পিছনের জঙ্গলে! অধরা অভিযুক্তরা
এই প্রসঙ্গে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে অভয়া কাণ্ডের কথা। সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে হস্তক্ষেপ করেছিল সেই ঘটনায় এবং চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দিষ্ট গাইডলাইন ও টাস্কফোর্স গঠন করেছিল। ডব্লিউবিডিএফ-এর অভিযোগ, সেই নির্দেশাবলীর কিছুই মেনে চলা হয়নি। দুর্গাপুরের ঘটনাতেও অভিযোগ গ্রহণে বিলম্ব, শারীরিক পরীক্ষায় গলদ এবং তদন্তে গাফিলতি স্পষ্ট। সেই কারণেই পাঁচ দফা দাবি সহ বিচারপতির হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে, যাতে অন্তত নির্যাতিতার ন্যায়বিচার ও সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।
মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের সম্পাদক বিপ্লব চন্দ্র কড়া ভাষায় প্রশ্ন করেন, একটার পর একটা এভাবে নির্যাতন চলতেই থাকবে? অপরাধীরা শাস্তি না পেলে বাংলার কোনও মেয়েই নিরাপদ নয়। অন্যদিকে, ঘটনায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিলোত্তমার মা। তাঁর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই। ধর্ষকদের প্রশাসন যদি রক্ষা করে, তবে মানুষকেই শাস্তি দিতে হবে।
এদিকে, নির্যাতিত তরুণীর পরিবার জানিয়ে দিয়েছে, তারা আর মেয়েকে বাংলায় রাখবে না। বাবার অভিযোগ, তাঁর মেয়ে এখানে নিরাপদ নয়। ইতিমধ্যেই, ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত জানিয়েছেন, বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল। সব দিক খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে। পৃথকভাবে পদক্ষেপ করেছে স্বাস্থ্য দফতরওড। দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সম্পূর্ণ ঘটনার রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। কীভাবে পড়ুয়া রাতের অন্ধকারে নিরাপত্তাহীন অবস্থায় গণধর্ষণের শিকার হলেন, কেন দ্রুত মেডিক্যাল ও আইনগত সহায়তা দেওয়া হয়নি এই সব প্রশ্নের উত্তর চাইছে স্বাস্থ্যভবন।