পাহাড় সফরের আগে দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে কড়া ধমক দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সরকারি আধিকারিকের পদে বসে তাঁরা রাজনৈতিক কর্মীর মতো আচরণ করছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। সঙ্গে ২ আধিকারিককে রাজ্যপালের পরামর্শ, আগুন নিয়ে খেলবেন না। আপনাদের বয়স কম, আইনের হাত থেকে পার পাবেন না।
এদিন রাজ্যপাল বলেন, ‘সরকারি কর্মচারীরা রাজনৈতিক দলের পদাতিক সেনার মতো কাজ করছেন। সরকারি কর্মীরা তাঁদের দায়িত্ব ভুলে গিয়েছেন। তাঁদের কাজ শুধু মাইনে তোলা। অন্য সময়ে তাঁরা রাজনৈতিক দলের সামনের সারির সেনার মতো কাজ করছেন’।
রাজ্যপালের দাবি, ‘আমি একাধিক ক্ষেত্রে এটা লক্ষ্য করেছি। গণতন্ত্র এটা পছন্দ করে না। আইনের শাসন এটা পছন্দ করে না। সংবিধান এটা পছন্দ করে না। সরকারি কর্মচারী হিসাবে আপনাকে রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ হতেই হবে। আপনি রাজনৈতিক কাজ করতে পারেন না। কিন্তু এখানে রাজনৈতিক কাজই প্রাধাণ্য পাচ্ছে’।
এর পরই সরাসরি ২ প্রশাসনিক আধিকারিককে ধমক দেন ধনখড়। বলেন, ‘দার্জিলিংয়ে পুলিশ সুপার ও জেলাশাসক দুজনেই তরুণ আধিকারিক। আমি তাদের বলব, রাজনৈতিক কর্মীর মতো আচরণ করা আপনাদের কাজ নয়। তারা রীতিমতো কোমর বেঁধে রাজনীতি করছেন। বেশ কিছু গুরুতর তথ্য রয়েছে। তাঁরা কার্যত ২৪ ঘণ্টা রাজনীতিতে নিমজ্জিত। সেটা তাদের কাজ নয়’।
ধনখড়ের সাবধানবাণী, ‘তারা পেশায় এতই নবীন যে তাঁদের আগুন নিয়ে খেলা উচিত নয়। তাঁদের রুল বুক পড়ে দেখার সময় এসেছে। দেওয়াল লিখন পড়ার সময় এসেছে। আমি তাঁদের বলেছি যে আগুন নিয়ে খেলবেন না। এর ভারী মূল্য চোকাতে হতে পারে আপনাদের। আইনের হাত আপনাদের একদিন ধরবেই’।
জবাবে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘রাজ্যপাল এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করছেন। জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা ওঁর নেই। সম্মানবোধ থাকলে উনি এমনটা বলতেন না। DM, SP-দের অধিকার সংবিধানে সুরক্ষিত। উনি তাঁদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন।’
রাজ্যপালের পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘শুধু উত্তরবঙ্গে নয়, রাজ্যপাল যা বলেছেন তা গোটা রাজ্যেই আমরা দেখতে পাচ্ছি। সাংসদ হওয়ার দেড় বছর পরেও পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক আমার সঙ্গে দেখা করেন না। সময় দিয়েও সাক্ষাৎ করতে অস্বীকার করেন।’