শুভেন্দু অধিকারীর মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর মেদিনীপুরে প্রথম জনসভায় অধিকারী পরিবারের নাম নিলেন না তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে নাম না করেই বুঝিয়ে দিলেন অধিকারীদের ছাড়াই জেলায় চলতে তৈরি দল। সোমবার মেদিনীপুর কলেজ মাঠের জনসভায় একাধিকবার নানা কথায় অধিকারীদের ও দলীয় নেতা-কর্মীদের বার্তা দেন মমতা। বিকল্প নেতৃত্ব হিসাবে মৃগেন মাইতি, অখিল গিরির মতো নেতার নাম উঠে আসে তাঁর মুখে।
এদিন মমতা বিরোধীদের বিরুদ্ধে ঘর ভাঙার অভিযোগ তুলে বলেন, ‘সিপিএম – কংগ্রেস – বিজেপি ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছো। ভাবছো এভাবেই চলবে? শুধু গালাগালি দিয়ে বেড়াচ্ছো। অনেক টাকা ছড়াচ্ছো। দাঙ্গা লাগাচ্ছো, মিথ্যে কথা বলছো, কুৎসা করছো, চক্রান্ত করছো, অপপ্রচার করছো, সরকার ভাঙছো, দল ভাঙছো, ঘর ভাঙছো, মানুষের ভালবাসা ভাঙছো, জেনে রেখে দেও, ভারতবর্ষের মাটি থেকে তোমাদের উৎখাত হওয়ার সময় চলে এসেছে। আগে নিজেদের বাঁচাও’।
বক্তব্যের মাঝে তৃণমূলের সূচনাকালে মেদিনীপুরে অখিল গিরির ভূমিকা তুলে ধরেন মমতা। বলে রাখি, অখিল গিরি জেলায় অধিকারীদের বিরোধী গোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান নেতা। মমতা বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস যখন তৈরি করেছিলাম, কাঁথি থেকে প্রথম অখিল গিরি লড়াই করেছিল। সেদিন হয়তো আমরা জিততে পারিনি। কিন্তু আমরা দ্বিতীয় হয়েছিলাম। প্রথমবার, মাত্র ২২ দিনের জায়গায়’।
এর পর নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে মমতার বার্তা, ‘তৃণমূল কংগ্রেস অত দুর্বল নয়। যদি কেউ মনে করে তৃণমূল কংগ্রেসকে ব্ল্যাকমেলিং করবো, বার্গেনিং করবো..... তৃণমূল কংগ্রেসকে নির্বাচনের সময় দুর্বল করবো। সেই বিজেপি দল ও বিজেপি দলের যারা বন্ধু, তাদের কাছে পরিষ্কার করে বলবো, আগুন নিয়ে খেলবেন না। আর যাকে পারেন জব্দ করতে, তৃণমূল কংগ্রেসটাকে পারবেন না। কারণ, তৃণমূল কংগ্রেস মানুষকে আলিঙ্গন করে বেঁচে আছে। তৃণমূল কংগ্রেস জন্মলগ্ন থেকে লড়াই করে বেঁচে আছে’।
এমনকী দলের বিরুদ্ধে শুভেন্দুর অনুগামীরা যে অভিযোগ তুলেছেন তাকেও কটাক্ষ করেন মমতা। বলেন, ‘সবাই না কি দুর্নীতিবাজ, আর ওনারা না কি সাধুপুরুষ’।
শুভেন্দুর বিদ্রোহের জন্য বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলে মমতা বলেন, ‘দেখুন কী ভাবে দল ভাঙছে। কী ভাবে টাকা করছে, কী ভাবে সরকার ভাঙছে, একটার পর একটা সরকার ভেঙেছে এই সব করে। যতই সরকার ভাঙার চেষ্টা করুক না কেন, আমাদের আজকের সভা থেকে একটাই শপথ, ২০২১ আমাদের, ২০২১ বাংলার’।
সভা শেষে দলের কর্মীদের মমতার তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা, ‘কোনও প্ররোচনার কাছে মাথা নত করবেন না। কোনও অত্যাচারের কাছে মাথা নত করবেন না’।
এদিন মেদিনীপুরে মমতার সভায় হাজির ছিলেন না অধিকারী পরিবারের কোনও সদস্য। সভায় ছিলেন না শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরাও। এদিনের সভায় নাম করে বিধায়কদের হাজিরা নিতে দেখা যায় তৃণমূলনেত্রীকে।