নবদ্বীপের তৃণমূল পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা। দোল উৎসবের প্রস্তুতি বৈঠকে তিনি এবার যে মন্তব্য করলেন তা নিয়ে জন্ম নিল নতুন বিতর্কের। দোল উৎসবের প্রস্তুতি পর্বে সম্প্রতি পুরসভার তরফে একটা বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেই বৈঠকে বৈষ্ণব মঠের প্রধান, বিভিন্ন ক্লাবের প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই বিমানকৃষ্ণের আবেদন নবদ্বীপবাসীর জন্য, দোলে মাছমাংস খাবেন না। সেই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো সামনে এসেছে। সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা।
একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গিয়েছে, সেই ভিডিয়োতে পুরপ্রধান বলছেন যে আমি কোনও ধর্মকে ছোট করছি না। আমাদের হিন্দুধর্মে বিভিন্ন উৎসবে আমরা নিরামিষ খেয়ে থাকি। এটা চৈতন্যদেবের আবির্ভাবতিথি। এই তিথিতে এখানে চৈতন্যদেবের লক্ষ লক্ষ ভক্ত আসেন। তাঁরা অধিকাংশই নিরামিষভোজী। তাঁরা এসে এই দৃশ্যদূষণ দেখবেন। দেখবেন কেউ রাস্তার এ ধারে খাসি খাচ্ছেন, কেউ ওধারে মুরগি খাচ্ছেন। এটা তাঁদের কাছে অসহনীয়। সেটা মাথায় রেখে নবদ্বীপবাসীর কাছে পুরসভার পক্ষ থেকে আমাদের আবেদন আগামী ১৩,১৪ ও ১৫ মার্চ আমিষ ত্যাগ করে নিরামিষ খান।
এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও বলেন, এটা কোনও সরকারি আদেশ নয়। বরং আমাদের অতিথিদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখানোর জন্য একটা সহজ আবেদন। মাছ মাংস খাওয়া তাঁদের অনুভূতিতে আঘাত করে। সেই জন্য আমিষ বর্জন করা উচিত।
তবে পুরপ্রধানের এই বক্তব্যকে ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই নানা বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এভাবে কোনও উৎসবের জন্য় কি নিরামিষ খাওয়ার জন্য় পুরসভার তরফে আবেদন করা যায়? কারণ তৃণমূলে নেত্রী তো নিজেই খাওয়া নিয়ে বিষয়টি কারোর উপর কোনও দিন চাপিয়ে দিতে চাননি। তবে এবার তাঁর দলেরই পুরপ্রধান অবশ্য নির্দিষ্ট দিনে নিরামিষ খাওয়ার আবেদন করছেন। তবে তৃণমূলের পুরপ্রধানের এই আবেদনে কার্যত খুব খুশি বিজেপি।
তবে এই প্রসঙ্গে অনেকের মনে পড়ে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর গত এপ্রিলের একটি ভাষণের কথা।
উধমপুরে এক জনসভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংয়ের পক্ষে প্রচারে গিয়ে মোদী বলেছিলেন, 'কংগ্রেস এবং ভারতীয় জোট বেশিরভাগ ভারতীয়ের অনুভূতির তোয়াক্কা করে না। ভালোবাসা মানুষের অনুভূতি নিয়ে খেলা করে। তাদের এক নেতা 'সাওয়ান' মাসে মাটন রান্না করতে এক সহযোগীর কাছে গিয়েছিলেন, যিনি একজন সাজাপ্রাপ্ত এবং জামিনে মুক্ত।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে কটাক্ষ করে মোদী বলেছিলেন, 'ওরা ভিডিও শ্যুট করে ভারতীয়দের বিশ্বাসে উস্কে দিয়েছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদবের সঙ্গে রাহুল গান্ধীর চম্পারণের মাংস রান্না করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল।
আইন কাউকে কিছু খেতে বাধা দেয় না, মোদীও না। সকলেই যখন খুশি নিরামিষ এবং নন-ভেজ খেতে পারেন। তবে এই লোকদের (ইন্ডিয়ান জোটের সদস্যদের) উদ্দেশ্য ভিন্ন। তাদের উদ্দেশ্য মুঘলদের মতো, যারা ভারতে শুধু রাজাদের পরাজিত করেই তৃপ্তি পায়নি। তারা তখনই তৃপ্তি অর্জন করেছিল যখন তারা মন্দিরগুলি ধ্বংস করেছিল, প্রধানমন্ত্রী যোগ করেন।