পানীয় জলে দূষণের অভিযোগ উঠেছে। তাই এবার শিলিগুড়িবাসীকে পুরসভার জল পান করতে নিষেধ করল শিলিগুড়ি পুরসভা। এমনকী আগামী ২ জুন পর্যন্ত শিলিগুড়ি পুরসভার জল পান করতে নিষেধ করা হয়েছে। আজ, বুধবার এই ঘোষণা করেছেন শিলিগুড়ির পুরসভার মেয়র গৌতম দেব। আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। তাই এই ঘোষণার পর শিলিগুড়ি শহরজুড়ে বাসিন্দাদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। শিলিগুড়ি পুরসভার সরবরাহ করা জল ২ জুন পর্যন্ত পান করা যাবে না। তাহলে বিকল্প উপায় কী? উঠছে প্রশ্ন। পানীয় জলের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
এদিকে তিস্তা নদীতে বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে। বেশ কদিন ধরেই মহানন্দা নদীর জল পরিশ্রুত করে শহরবাসীর বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করছিল শিলিগুড়ি পুরসভা। কিন্তু আজ, বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে মেয়র গৌতম দেব জানান, আগামী ২ জুন তারিখ পর্যন্ত সরবরাহ করা জল শহরবাসী যেন পান না করেন। দৈনন্দিন কাজের জন্য তা যেন ব্যবহার করেন। কারণ এখন এই জল পানের যোগ্য নয়। এই পানীয় জলে বিওডি’র তারতম্যের কারণে তা পানের ‘যোগ্য নয়’ বলে সূত্রের খবর। এখন ভালরকম গরম আছে। তার মধ্যে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এই আবহে জল যদি পানের অযোগ্য হয় তাহলে তা সত্যিই চিন্তার বিষয়।
আরও পড়ুন: ‘আমি আপনাদের পাশে আছি’, পায়ে হেঁটে স্বামীজির বাড়ি গিয়ে সন্ন্যাসীদের আশ্বাস মমতার
অন্যদিকে এই ঘটনা নিয়ে মানুষের মনে ভয় কাজ করতে শুরু করেছে। তবে মেয়র জানান, এখন তিস্তা থেকে জল সরবরাহ হচ্ছে। মহানন্দার জল পাঠানো হচ্ছে। সেই জলে বিওডি বেশি পরিমাণে রয়েছে। নতুন করে আজ, বুধবার জলের নমুনা পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হচ্ছে। সেই রিপোর্ট আসতে পাঁচদিন সময় লাগবে। তার মধ্যে ২ জুন বিকালে তিস্তার জল সরবরাহ হতে পারে। তাই আগামী ২ জুন পর্যন্ত শিলিগুড়ি পুরসভার পক্ষ থেকে যে জল সরবরাহ করা হচ্ছে সেই জল পান করতে মানা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিকল্প উপায় হিসেবে রোজ শহরে ১ লাখ জলের পাউচ বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাঠানো হবে।
এছাড়া সম্প্রতি বৃষ্টিপাতের জেরে মহানন্দার জলে অক্সিজেনের পরিমাণ অনেক বেড়ে গিয়েছে। তাই শিলিগুড়ি পুরসভা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘বাড়িতে সরবরাহ করা জল আগামী ২ তারিখ পর্যন্ত পান করতে নিষেধ করা হয়েছে। আমরা প্যাকেটের জলের ব্যবস্থা করছি। এগুলি মেয়র কিছু করে না। এটা সরকারি বিষয়। আমাদের নজরে আসতেই জল পানে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এতদিন জলে কোনও সমস্যা ছিল না।’ কিন্তু বিজেপি এবং সিপিএম রে রে করে নেমে পড়েছে। শিলিগুড়ি বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘পানীয় জল যে দূষিত হয়েছে, এরকম একটি ভয়ঙ্কর খবর কেন চেপে রাখা হয়েছিল? দশ দিন ধরে মানুষ এই জল পান করেছে। তাতে প্রচুর মানুষ অসুস্থ হবে।’ সিপিএমের প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের কথায়, ‘ওরা জিতে এসে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। জলের অপর নাম জীবন। এই ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক।’