এক রাতের প্রবল বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি জনজীবন কার্যত থমকে গিয়েছে। দার্জিলিঙ ও সংলগ্ন এলাকায় টানা বর্ষণে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সুখিয়া পোখরিতে ভূমিধসে ও মিরিকের কাছে একটি লোহার সেতু ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৪ জনের। বহু জায়গায় ধস নেমে রাস্তাঘাট বন্ধ, বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং ও সিকিমের সঙ্গে যোগাযোগ। বিপর্যস্ত এলাকায় উদ্ধারকাজ চলছে জোরকদমে।
আরও পড়ুন: দার্জিলিংয়ে বন দফতরের স্টাফ কোয়ার্টারে ভয়াবহ আগুন, পুড়ে ছাই ৮টি কোয়ার্টার
আবহাওয়া দফতর আগেই জানিয়েছিল, উত্তরবঙ্গে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার রাত থেকেই পাহাড়ে শুরু হয় প্রবল বর্ষণ। ভোরের আগেই জল নামতে শুরু করে পাহাড়ি ঢাল বেয়ে, সঙ্গে ধসে বন্ধ হয়ে যায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। তিস্তা নদীর জল হু হু করে বেড়ে ওঠে। ফলে তিস্তাবাজার সংলগ্ন ২৯ মাইলের ভালুখোলায় জলের স্রোতে ডুবে যায় জাতীয় সড়ক ১০। ফলে সিকিম ও কালিম্পংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সবচেয়ে ভয়াবহ চিত্র ধরা পড়ে মিরিক অঞ্চলে। রাতের অঝোর বৃষ্টিতে দুধিয়া ও মিরিকের মাঝামাঝি একটি লোহার সেতু ভেঙে পড়ে নদীতে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তখনই সেতুর উপর দিয়ে কিছু মানুষ চলাচল করছিলেন। প্রবল স্রোতে ভেসে যায় অন্তত ৭ জনেরও বেশি। তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও কয়েকজন নিখোঁজ, তাঁদের সন্ধানে চলছে অভিযান। প্রশাসন জানিয়েছে, মৃতদের সনাক্তকরণের কাজ চলছে।
দার্জিলিঙে প্রবেশের অন্যতম প্রধান রাস্তা দিলারাম হয়ে যে পথ শহরে পৌঁছয়, সেখানেও ধস নেমে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। এমনকি পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় রোহিণী রোডের একাংশ ভেঙে গেছে নদীর দিকে। ফলে শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাতায়াত কার্যত অচল। যেসব পর্যটক পাহাড়ে রয়েছেন, তাঁদের আপাতত হোটেলেই থাকতে বলা হয়েছে।
গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) পক্ষ থেকে রবিবার সকালে জরুরি নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, বর্তমানে রক গার্ডেন ও টাইগার হিলের মতো পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে পর্যটক ও স্থানীয়দের সতর্ক করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ধসে আটকে পড়া কয়েকটি এলাকায় উদ্ধারকাজ চলছে।