ঘূর্ণিঝড় অনেক মোকাবিলা করেছে পশ্চিমবঙ্গের তিন উপকূলবর্তী জেলা। গতবছর আমফানও সামলে নিয়েছে সাবলীলভাবেই। কিন্তু এদিন যে ছবি ধরা পড়ল, এমন ভয়ংকর জলোচ্ছ্বাস আগে কখনও দেখেছে বলে মনে করতে পারছেন না উপকূলের বাসিন্দারা। বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাস্তবে তা ফলতেও শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ল্যান্ডফলে ফ্রেজারগঞ্জ–সহ বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়ে উঠছে।
বিরাট বিরাট ঢেউ আছড়ে পড়ছে। ভেসে গিয়েছে ফ্রেজারগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা। জল ঢুকে গিয়েছে কপিলমুণির আশ্রমেও। গোটা উপকূল জুড়ে ভয়ংকর জলোচ্ছ্বাস চলছে। বুধবার দুপুর ৩টো ১৫ মিনিটে শুরু হওয়ার কথা পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। চলবে সন্ধ্যা ৬টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত। ২০২১ সালে এটিই প্রথম ও শেষ ‘ব্লাড মুন’ হতে চলেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগণায় প্রচুর নদীবাঁধ ভেঙে গিয়েছে। নোনাজল ঢুকে পড়ে কৃষিজমিতে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ইতিমধ্যেই প্রতিটি জেলার জেলাশাসকদের সতর্ক করা হয়েছে নবান্ন থেকে। নামখানা, সুন্দরবন–সহ উপকূলের বেশ কিছু এলাকায় বাঁধ উপচে জল ঢুকতে শুরু করেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সাগরদ্বীপ, কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, বকখালি প্রভৃতি এলাকায় একের পর এক গ্রামে জল ঢুকেছে। সময় যত এগোবে ততই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পরিষ্কার করে বোঝা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফ্রেজারগঞ্জের গোটা এলাকা জলের তলায় চলে গিয়েছে। খড়কুটো ধরে বাঁচার চেষ্টা করছেন মানুষজন।
জলের তলায় চলে গিয়েছে বহু গাড়ি, বড় রাস্তায় কোমর সমান জল। পারে এসে আছড়ে পড়ছে দানবীয় এক–একটা সাগরের ঢেউ। ভাঙন কবলিত মৌসুনি দ্বীপের বালিয়াড়ায় চিনাই নদীর বাঁধে বড়সড় ফাটল তৈরি হওয়ায় জোয়ারে নোনা জলও ব্যাপক ভাবে ঢুকে পড়েছে এলাকায়। পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুরে প্রায় ৫ কিমি বাঁধ টপকে সমুদ্রের জল ঢুকে প্লাবিত হয়েছে চাষের জমি। ফ্রেজারগঞ্জে ৬৮ কিলোমিটার বেগে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। ধামরায় ল্যান্ডফলের পরই বাড়তে শুরু করে সাগরের জল। গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হতে থাকে। শেষমেশ প্রশাসনের তরফে দ্রুত তাঁদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কাকদ্বীপেও প্লাবিত গ্রামের পর গ্রাম।