চা বলতে গোটা বিশ্ব একডাকে চেনে দার্জিলিংয়ের চা। স্বাদে, গন্ধে একেবারে অতুলনীয়। কিন্তু সেই দার্জিলিং চায়ের বাজারে থাবা বসিয়েছে নেপালের চা। বহু জায়গায় দার্জিলিংয়ের চায়ের সঙ্গে নেপালের চা মিশিয়ে তা দার্জিলিং চা বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর জেরে ঠকতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় এই নেপালের চায়ের আগমন নিয়ে যথেষ্ঠ উদ্বিগ্ন। বুধবার আলিপুরদুয়ারে প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বলেন, ভারতীয় চা পর্ষদকে রাজ্য শ্রম দফতরের তরফে লিখিতভাবে অনুরোধ করা সত্ত্বেও সময়সীমা( চা পাতা তোলার মরশুম প্রায় ২৩দিন এগিয়ে নিয়ে আসার ঘটনা) বাড়ানো হয়নি। এনিয়ে মুখ্যসচিবকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন।
নেপালের চা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কিছু চা বাইরে থেকে আসছে। প্রসেস না করা নেপালের চা ঢুকছে। এর ফলে ডুয়ার্স ও দার্জিলিং চায়ের ক্ষতি হচ্ছে। সেটাও দেখে নিতে হবে।
এদিকে এর আগেও এই বহিরাগত চা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্য়মন্ত্রী। তবে মুখ্য়মন্ত্রীর এই উদ্যোগে খুশি চা বাগানের সঙ্গে যুক্ত একাধিক সংগঠন। ক্ষুদ্র চা উৎপাদকদের কনফেডারেশনও মুখ্য়মন্ত্রীর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।
নেপালের চা নিয়ে বার বারই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন দার্জিলিং, তরাই ডুয়ার্সের চা উৎপাদক। সেই সঙ্গে যেভাবে দার্জিলিংয়ের চায়ের নাম করে নেপালের চা বিক্রি করা হচ্ছে তাতে দেশের পাশাপাশি বিদেশের বাজারেও খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। সেই সঙ্গেই সামগ্রিক পরিস্থিতিতে রাজ্যের চা বাগানগুলি মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। এনিয়ে চা উৎপাদকরা বিভিন্ন মহলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হচ্ছিল না। তবে মুখ্য়মন্ত্রী গোটা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন।
নেপালের চা আসার কারণে সমস্যাটা ঠিক কী?
আসলে অত্যন্ত কৌশলে বছরের পর বছর ধরে নেপালের সস্তা চা ভারতের বাজারে প্রবেশ করানো হয়। বহু মানুষ দার্জিলিংয়ের চা বলে নেপালের চা কিনে নিয়ে যান। আর এই নেপালের চা কার্যত দার্জিলিংয়ের বহু চা শ্রমিক পরিবারে আঘাত হানছে। কিন্তু দার্জিলিংয়ের চা তো দার্জিলিংয়েরই। আর নেপালের চা নেপালের। সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ কেন দার্জিলিংয়ের চা ছেড়ে আচমকা নেপালের চা খাওয়া ধরলেন?
অভিজ্ঞমহলের দাবি, দার্জিলিংয়ের চা ছেড়ে নেপালের চা খাচ্ছেন এমনটা ঠিক নয়। আসলে বিক্রেতাদের একাংশ দার্জিলিংয়ে চা বলে নেপালের চা বিক্রি করছেন। কোথাও আবার সামান্য দার্জিলিং টির সঙ্গে নেপালের চা মিশিয়ে বিক্রি করা হয়। ক্রেতারাও বুঝতে না পেরে কিছুটা সস্তায় নেপালের চা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। যার জেরে ভুগতে হচ্ছে দার্জিলিংয়ের চা কে। দার্জিলিংয়ের চা বাগানগুলিকে।