বাংলার সর্বজনীন দুর্গাপুজো। সেই পুজোর সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছে অতীতের নানা রোমাঞ্চকর কাহিনি। শিলিগুড়ির আনন্দময়ী কালিবাড়ির পুজোও ঠিক তেমনি ইতিহাসপ্রসিদ্ধ। কথিত আছে চারণকবি মুকুন্দদাসের সহযোগিতায় এখানে দেবীর মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেই মন্দিরেই প্রতিবছর দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয় আজও। একটা সময় এই মন্দিরেই আসতেন অগ্নিযুগের বিপ্লবীরা। তাঁদের চরণস্পর্শে ধন্য় এই মন্দির।
শিলিগুড়ির মিত্র সম্মিলনীর পুজোকে সবথেকে প্রাচীন হিসাবে মনে করা হয়। আর তারপরই রয়েছে প্রাচীনত্বের নিরিখে আনন্দময়ী কালিবাড়ির পুজো।
জনশ্রুতি আছে ১৯২৪ সালে শিলিগুড়িতে এসেছিলেন চারণকবি মুকুন্দদাস। সেই সময় চারপাশ জঙ্গলে পরিপূর্ণ। বসতিও অনেকটাই কম। পালাগান গেয়ে তিনি যে অর্থ উপার্জন করেছিলেন তারই সিংহভাগ দিয়ে তৈরি হয়েছিল টিনের চালার ছোট মন্দির। সেই সময় প্রায় ১৬ কাঠা জায়গার উপর তৈরি হয়েছিল এই মন্দির। কার্যত বিপ্লবীদের আখড়া ছিল এই মন্দিরটি। লাঠিখেলা, কুস্তিচর্চা হল এই মন্দির প্রাঙ্গনে। তবে সেসব অতীত আজ।
বর্তমানে সেই মন্দিরের গঠনগত অনেক পরিবর্তন হয়েছে। সেখানেই দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয়। শিলিগুড়ির মহাবীরস্থান সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে এই প্রাচীন মন্দির। একচালার সাবেকি প্রতিমা। বিগতদিনে এখানে বলিপ্রথা ছিল। তবে বর্তমানে পশুবলি আর হয়না। তবে পুজোর চারদিনে বিশেষ ভোগের ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এখানে প্রতিমা দেখতে আসেন।
অত্যন্ত ভক্তি ও নিষ্ঠা সহকারে এখানে দেবীর আরাধনা করা হয়। সেই ভক্তির টানেই আসেন বহু মানুষ। আর আসেন এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা অতীতের সোনালি স্মৃতিকে আরও একবার মনে করতে, স্পর্শ করতে এখানকার পবিত্র ভূমিকে।