প্রতিবছর দুর্গাপুজোর আগে পুকুর পাড়ে পাওয়া যেত মোহর। সেই মোহর বিক্রি করেই দুর্গাপুজোর খরচ উঠতো। মা মনসাই নাকি সেই সমস্ত মোহর দিতেন। একসময় মোহর দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন মা মনসা। আর তারপরে হয়েছিল দেশভাগ। বাংলাদেশের ঢাকা জেলার ধামরাই গ্রামের সেই দুর্গাপুজো এখন হয়ে থাকে বীরভূমের সিউড়ির মালিপাড়ার বসাক বাড়িতে। অনেকে একে ‘বাংলাদেশের মায়ের পুজো’ বলে থাকেন।
আরও পড়ুন: বাহন সিংহের ডেরায় দেবী দুর্গার আরাধনা, আফ্রিকার মাসাইমারায় হচ্ছে পুজো
বহু বছরের পুরনো এই পুজোর একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। একই বেদীতে থাকে মা দুর্গা, মা মনসা, কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী এবং সরস্বতী। পঞ্চমীতে হয়ে থাকে মা মনসার পুজো। দেশভাগের পর বাংলাদেশ থেকে বীরভূমে এই পুজো নিয়ে এসেছিলেন যামিনী কান্ত বসাক নামে এক তাঁত শিল্পী। আগে তৎকালীন ওপার বাংলাতেই তার বাড়ি ছিল। কিন্তু দেশভাগ হওয়ার ফলে বাধ্য হয়ে তাকে আশ্রয় নিতে হয়েছিল বীরভূমে। ঢাকার ধামরাইয়ে একটি নাট মন্দির ছিল। এদেশেও একই আদলে নাট মন্দির তৈরি করা হয়েছে। শোনা যায়, বাংলাদেশে এখনও সেই মন্দির রয়েছে। কথিত আছে, ওই মন্দিরের পাশেই রয়েছে একটি পুকুর। তার পাশে একটি গাছের নিচেই ছিল মা মনসা। তিনিই দুর্গা পুজোর খরচ যোগাতেন।
এখানে বৈষ্ণবী মতেই মায়ের পুজো হয়। ফলে অষ্টমীর ক্ষ্যানে কোনও রকমের বলি হয় না। নবমীতে হয় বিরাট যোগ্য এবং দশমীতে দুর্গার ঘট বিসর্জন হয়। ২০১৬ সাল পর্যন্ত দুর্গার মাটির প্রতিমা তৈরি করা হত। তবে স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পর ২০১৭ সাল থেকে পিতলের মূর্তিতে পূজিত হচ্ছেন দেবী দুর্গা।