পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের কাছে ডাক্তারির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় সব অভিযুক্তকে পুলিশ ধরেছে বলে গতকাল জানিয়েছিলেন কমিশনার। আর এবার জানা গিয়েছে, ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে পুলিশে ধরিয়ে দেন তারই বোন। এদিকে মঙ্গলবার অপরাধের ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। সঙ্গে ছিল অভিযুক্তরা। অপরাধ পুনর্গঠনের জন্য সেখানে যাওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত শফিক শেখের বোন রোজিনা শেখকে সোমবার দুর্গাপুরের আণ্ডাল ব্রিজের নীচে তাকে ধরিয়ে দিতে সহায়তা করেছিলেন।
এই বিষয়ে রেজিনা বলেন, 'আমি চেয়েছিলাম ভাই আইনের মুখোমুখি হোক। তার জন্য আমাদের পরিবারের লজ্জার ভাগিদার হওয়া উচিত নয়।' এদিকে যে শেখ নাসিরুদ্দিনের মোটরসাইকেলে করে অপরাধীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়, তাকেও ধরেছে পুলিশ। ধৃত অন্য তিনজন হল - রিয়াজউদ্দিন (কলেজের প্রাক্তন নিরাপত্তারক্ষী), অপু বারুই এবং ফিরদৌস শেখ।
এদিকে দুর্গাপুরে গণধর্ষণের শিকার ডাক্তারি পড়ুয়ার মেডিক্যাল রিপোর্ট সামনে এসেছে। সেই রিপোর্টে নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে ক্ষতচিহ্নের উল্লেখ করা হয়েছে। সঙ্গে যৌনাঙ্গ দিয়ে ব্যাপক রক্তপাতেরও উল্লেখ করা হয়েছে। ধর্ষণের জেরেই তা হয়ে থাকতে পারে বলে চিকিৎসকদের মত। এদিকে ধৃতদের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে এই মামলায়। ইতিমধ্যেই ধর্ষণের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে নির্যাতিতার মেডিক্যাল রিপোর্টেই। এই আবহে ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল এলে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের জড়িত থাকার পাকা পোক্ত প্রমাণ পাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, নির্যাতিতা তরুণী ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১০ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ওই পড়ুয়া সহপাঠীদের সঙ্গে কলেজের বাইরে খেতে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় কয়েকজন যুবক ওই তরুণীর পথ আটকায় এবং জোর করে হাসপাতালের পিছনের দিকে থাকা একটি জঙ্গলে নিয়ে যায়। এদিকে দুষ্কৃতীদের তাড়া খেয়ে তরুণীর সঙ্গে থাকা বন্ধুটি পালিয়ে যান বলে জানা যায়। এদিকে গণধর্ষণ করার পর ডাক্তারি পড়ুয়ার মোবাইলটি ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। ৩ হাজার টাকাও নাকি চাওয়া হয়েছিল সেই তরুণীর থেকে। তা না পেয়ে অভিযুক্তরা নাকি নির্যাতিতাকে মারধরও করেছিল। এই আবহে নিজের অভিযোগপত্রে নির্যাতিতা দাবি করেন, ৫ জন মিলে তাঁকে ধর্ষণ করেছিল।