আরজি কর, কসবা ল কলেজের পরে দুর্গাপুর। বাংলার বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াকে গণধর্ষণ করার ঘটনায় তোলপাড় গোটা দেশ। ওড়িশার বাসিন্দা সেই তরুণীর সঙ্গে দেখা করেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার। সেই সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অর্চনা জানালেন, নির্যাতিতার শরীরে আঘাতের চিহ্ন এখনও স্পষ্ট। তিনি বলেন, 'শুনলাম জঙ্গলের দিকে পালাতে গিয়েই ওই ঘটনাটি ঘটেছে। সবাই তো এক সঙ্গে পড়াশোনা করে। বাবা-মাকে ছাড়া হস্টেলে থাকে। সুতরাং সেখানে বিশ্বাস করাটাই ধর্ম। সব থেকে ভয়াবহ বিষয়, কলেজের কাছে এমন একটা ঘটনা ঘটেছে। যা পশ্চিমবঙ্গে আগে কোনও দিন শুনিনি।'
এদিকে ঘটনায় নির্যাতিতার সহপাঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পরিবার। মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদারকে নির্যাতিতা জানিয়েছেন, ওই বন্ধুই তাঁকে বাইরে যেতে বাধ্য় করেছিলেন। অভিযুক্ত এই সহপাঠীকে আটক করেছে পুলিশ। চলছে জেরা। রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্যাতিতা তরুণী ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা। তরুণীর পরিবার জানিয়েছে, গত ১০ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ওই পড়ুয়া সহপাঠীদের সঙ্গে কলেজের বাইরে বেরিয়েছিলেন ফুচকা খেতে। সেই সময় কয়েকজন যুবক ওই তরুণীর পথ আটকায় এবং জোর করে হাসপাতালের পিছনের দিকে থাকা একটি জঙ্গলে নিয়ে যায়। এদিকে দুষ্কৃতীদের তাড়া খেয়ে তরুণীর সঙ্গে থাকা বন্ধুটি পালিয়ে যান বলে জানা যায়। এদিকে গণধর্ষণ করার পর ডাক্তারি পড়ুয়ার মোবাইলটি ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা।
এর আগে এই রাজ্যে আরজি করে ডাক্তারি পড়ুয়াকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল। এদিকে কয়েক মাস আগেই কসবা ল কলেজে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। আর এবার দুর্গাপুরে বেসরাকরি হসপাতালের কাছে ধর্ষণের শিকার ডাক্তারি পড়ুয়া। এই আবহে অর্চনা বলেন, 'এই পরিস্থিতিতে দায়ী কে? রাজ্যের পুলিশ? কলেজ কর্তৃপক্ষ? কেউ একা দায়ী নয়। এটা যৌথ দায়। কেন সিসিটিভি নেই? সব দিকটাই দেখতে হবে।' তিনি আরও বলেন, 'এই কলেজে পাঁচটা ব্যাচে কমপক্ষে ৩০০ জন মেয়ে রয়েছে। নার্সিং স্টাফ ৫০০-র উপরে। এছাড়াও ফ্য়াকাল্টির সদস্যরাও রয়েছেন। কিন্তু তারপরেও পরিকাঠামো ঠিকঠাক নয়। আলো নেই, জঙ্গলের ভিতর দিয়ে এসেছি। একটাও সিসিটিভি ক্য়ামেরা নেই। খেতে যাওয়ার জন্য জঙ্গলের মধ্য়ে প্রবেশ করতে হচ্ছে। এগুলো নিয়ে শুধুই কলেজ কর্তৃপক্ষ নয়, এখানকার প্রশাসন যেন কোনও ব্যবস্থা নেয়। আমার পুলিশ, প্রশাসন, অধ্য়ক্ষ সবার সঙ্গে কথা হয়েছে।'