আজ, শনিবার সকালে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটল দুর্গাপুরে। বৌদিকে বটি দিয়ে কুপিয়ে খুন করল দেওর বলে অভিযোগ। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ল দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের কালিগঞ্জ অঞ্চলে। আর এই খুন করার পর বাড়ি থেকে চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করলে প্রতিবেশীরা ওই দেওরকে ধরে ফেলেন। তারপর ওই যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ ওই দেওরকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। আর বটির আঘাতে আরও একজন জখম হয়েছেন বলে খবর। সাতসকালে এমন ঘটনায় শিউরে উঠেছেন গ্রামবাসীরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, আজ শনিবার সকাল ৬টা নাগাদ নিজের বাড়িতে কাজ করছিলেন বিন্দু রুইদাস। তখন বাড়িতে ছিলেন না স্বামী বাম রুইদাস। বাম কাজ করেন দুর্গাপুর নগর নিগমে। সেখানে চলে গিয়েছেন তিনি। আর দাদা না থাকার সুযোগে বৌদির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে দেওর বিষ্ণু রুইদাস। তারপর তুমুল ধস্তাধস্তির পর বাগে আনতে না পেরে বৌদিকে বটি দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে দেওর বলে অভিযোগ। পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপ থানার অন্তর্গত কালিগঞ্জ এলাকায় এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কেন এমন করল দেওর? এই প্রশ্নও অনেকে এখন তুলতে শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন: ‘জলস্বপ্ন’ নিয়ে তৎপরতা, নানা সরকারি সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারদের কাজে লাগাতে মমতার নির্দেশ
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের গৃহবধূর নাম বিন্দু রুইদাস (৩২)। শনিবার সকাল থেকে দেওর বিষ্ণু রুইদাসের সঙ্গে বৌদি বিন্দু রুইদাসের অশান্তি শুরু হয়েছিল। বচসা চলাকালীনই দেওর বিষ্ণু বটি নিয়ে তেড়ে আসে। আর বৌদির গলায় সরাসরি কোপ বসিয়ে দেয়। তার পর তাঁর শরীরের একাধিক অংশে বঁটি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। তার জেরেই রক্তে ভেসে যায় গোটা ঘর। এই অবস্থায় বিষ্ণুকে বাধা দিতে গেলে বিন্দু রুইদাসের শাশুড়ি নিরুপমা রুইদাসকেও আক্রমণ করে সে। ধারালো বটির আঘাতে নিরুপমা দেবীও জখম হন। চিৎকার করে পাড়ার লোক জড়ো করেন নিরুপমা দেবী। প্রতিবেশীরা তখন এসে ধরে ফেলে দেওর বিষ্ণুকে। আর নিউ টাউনশিপ থানার হাতে তুলে দেয়। পুলিশ বিষ্ণুকে গ্রেফতার করেছে।
এছাড়া নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা এই ঘটনা নিয়ে বলেন, ‘আসলে দেওর বিষ্ণুর বহুদিন ধরেই খারাপ নজর ছিল বৌদির উপর। সে নানা সময়ে কুপ্রস্তাব দেওয়া, বাড়িতে দাদা না থাকলে বৌদিকে জাপটে ধরা করত বলে শুনেছি। সেটাই এবার চরম পর্যায়ে গেলে বাধা আসে। তার জেরেই এই খুন।’ যদিও এসিপি দুর্গাপুর সুবীর রায়ের বক্তব্য, ‘অভিযুক্ত বিষ্ণু রুইদাসকে আমরা গ্রেফতার করেছি। পারিবারিক বিবাদের জেরে এই খুন বলে অনুমান করা হচ্ছে। তবে মৃত্যুর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। ফরেনসিক দলও এই ঘটনার তদন্ত করবে।’