দুর্গাপুর থেকে বাঁকুড়া পর্যন্ত রেলপথের দাবি বহুদিনের। এই আবহে এই রুটে রেললাইন পাতার জন্যে সমীক্ষা শুরু হয়েছে বলে দাবি করলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। উল্লেখ্য, মশাগ্রাম লাইনের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। সেই রুটেই আছে বেলিয়াতোড় স্টেশন। বেলিয়াতোড় থেকে দুর্গাপুরের দূরত্ব প্রায় ২৮ কিলোমিটার। এই আবহে বাঁকুড়ার সঙ্গে দুর্গাপুরকে জুড়ে দিতে রেললাইন তৈরির দাবি উঠেছে। প্রসঙ্গত, মশাগ্রামে জুড়েছে দক্ষিণপূর্ব এবং পূর্ব রেলের লাইন। এই রুটে শীঘ্রই ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এরই মাঝে বিজেপি সাংসদ জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে দেখা দুর্গাপুর-বাঁকুড়া রুটে রেল যোগাযোগ গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছিলেন। সম্প্রতি নাকি সেই রেলপথের সমীক্ষা চালানো হচ্ছে বলে চিঠি দিয়েছেন রেলমন্ত্রী। (আরও পড়ুন: সীমান্তে কাঁটাতারে এবার বাধা এপারের গ্রামবাসীরাই, BSF-এর সঙ্গে কথা MLA-র)
আরও পড়ুন: প্রসূতির প্রাণ কেরে নেওয়া স্যালাইনের জল গড়াল হাই কোর্টে, দেওয়া হল মামলার অনুমতি
আরও পড়ুন: বিএসএফের গুলিতে জখম বাংলাদেশি পাচারকারী, প্রতিবাদ জানাল বিজিবি
হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইনের সঙ্গে জুড়েছে মশাগ্রাম-বাঁকুড়া রেলপথ। এই আবহে এবার দুই রেলপথের সিগন্যালিং এবং অন্যান্য ব্যবস্থার সমন্বয় গড়ে তুলতে মশাগ্রাম স্টেশনে ইন্টারলকিংয়ের কাজও এগিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, হাওড়া-বর্ধমান কর্ডের তুলনায় মশাগ্রাম-বাঁকুড়া রেলপথের উচ্চতা বেশি। এই আবহে দক্ষিণপূর্ব রেলের অধীনে থাকা মশাগ্রাম-বাঁকুড়া লাইনের সঙ্গে হাওড়ার রেলপথকে জুড়ে দিতে বিলম্ব হচ্ছিল। তবে সম্প্রতি দুই রেলপথকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালে দক্ষিণপূর্ব রেলের এই লাইনকে ন্যারোগেজ থেকে ব্রডগেজে রূপান্তের কাজ শুরু হয়েছিল। ২০০৫ সালে সেই কাজ শেষ হয়েছিল। ওই বছরই সোনামুখী পর্যন্ত ট্রেন চালানো শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে মশাগ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে যায় রেললাইন। আর সেই লাইন এবার জুড়েছে পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইনের সঙ্গে। প্রসঙ্গত, বাঁকুড়া থেকে খড়গপুর হয়ে হাওড়া যেতে ২৩১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। তবে মসাগ্রাম থেকে হাওড়া পর্যন্ত রেল পরিষেবা চালু হলে সেই দূরত্ব ৪৬ কিলোমিটার কমে ১৮৫ কিমি হবে। এই আবহে বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ এই রেলপথের জন্য উপকৃত হতে চলেছেন। (আরও পড়ুন: চুপি চুপি থাকত… কারও সাথে তেমন কথা বলত না! সোনারপুর থেকে গ্রেফতার ৫ বাংলাদেশি)
আরও পড়ুন: দিল্লি নিবাসী হাসিনা কন্যার বিরুদ্ধেও মামলা বাংলাদেশে, কী অভিযোগ পুতুলের নামে?
এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, বিষ্ণুপুর থেকে হাওড়ার রেলপথ কমানোর স্বার্থে রেল বহু বছর আগেই একটি পরিকল্পনা করেছিল। ভাবাদিঘি দিয়ে লাইন পেতে বিষ্ণুপুর ও হাওড়ার মধ্যকার দূরত্ব কমাতে চাইছে রেল। তবে এতে বাঁধ সেধেছে স্থানীয় প্রায় ১০০ জন। অপরদিকে বিকল্প পথে হাঁটতে নারাজ রেল কর্তৃপক্ষ। যার জেরে এই প্রকল্পের কাজ ঝুলে আছে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই। আর তাই আজও বিষ্ণুপুরবাসীদের সমস্যা মেটেনি। প্রসঙ্গত, হুগলির গোঘাটে প্রায় ৫২ বিঘা জমি জুড়ে রয়েছে ভাবাদিঘি। সেই দিঘির একাংশ বুজিয়ে তার ওপর দিয়ে রেললাইন পাততে চায় রেল। তবে স্থানীয় গ্রামবাসীদের দাবি, দিঘি না বুজিয়ে এর উত্তর পাড়় দিয়ে রেললাইন পাতা হোক। যদিও রেলের যুক্তি, তাতে প্রযুক্তিগত সমস্যা রয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি মানলে মাত্র সাড়ে ৬০০ মিটারের মধ্যে ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি লাইন বাঁকাতে হবে। যা সম্ভব না। তাই প্রস্তাব অনুযায়ী দিঘির উত্তর পাড় দিয়ে রেললাইন পাততে অনিচ্ছুক কর্তৃপক্ষ। এই টানাপোড়েনের জেরে আজও আকে আছে এই প্রকল্পের কাজ।
দাবি করা হচ্ছে, তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুর ৮২.৪৭ কিমি রেলপথ সমীক্ষায় ভাবাদিঘির উত্তর পাড় দিয়ে রেললাইন পাতার পরিকল্পা করেছিল রেল। সেই মতো নকশাও তৈরি হয়েছিল। তবে ২০০৮ সালে প্রকল্পের জন্যে জমি অধিগ্রহণের পরে জায়া যায় দিঘির একাংশ বুজি রেললাইন পাতা হবে। এই দিঘির মোট ২৬৮ জন অংশীদার আছেন। তাঁদের মধ্যে ১৭৭ জন ইতিমধ্যেই ক্ষতিপূর্ণ নিয়েছেন রেলের থেকে। তবে বাকি ৯১ জন মিলে গড়ে তোলেন 'দিঘি বাঁচাও কমিটি'। আপাতত তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুরের প্রস্তাবিত রেললাইনে বিষ্ণুপুর থেকে ময়নাপুর ২২.৪৮ কিমি অংশে ট্রেন চলাচল করছে। ওদিকে তারকেশ্বর থেকে আরামবাগ হয়ে গোঘাট পর্যন্ত ৩৩.৯৪ কিমি অংশে ট্রেন চলছে। গোঘাট থেকে ভাবাদিঘির ৯৫০ মিটারের জট কাটছে না এখনও। ওদিকে ভাবাদিঘির পরে কামারপুকুর পর্যন্ত ৫.৫০ কিমির কাজ শেষ। তবে কামারপুকুর থেকে বাঁকুড়ার জয়রামবাটি পর্যন্ত ৩.৩০ কিমির কাজ বাকি।