শিলিগুড়িতে এসে পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতকে সম্পূর্ণ রূপে মাওবাদী এবং নক্সালমুক্ত করার ডাক দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ।
সশস্ত্র সীমা বল বা এসএসবি-র ৬১তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার শিলিগুড়ির রানিডাঙায় অবস্থিত ফ্রন্টিয়ার হেডকোয়াটার্সের অনুষ্ঠানে যোগ দেন শাহ।
সেই কর্মসূচির মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, বিহার এবং ঝাড়খণ্ড ইতিমধ্যেই নক্সালমুক্ত হয়েছে। কিন্তু, ছত্তিশগড় ও উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে আজও মাওবাদী কার্যকলাপ চলছে। তবে, আগামী দিনে এইসব এলাকা থেকেও মাওবাদীরা নির্মূল হয়ে যাবে।
অমিত শাহ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘মাওবাদী দমন অভিযানগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে এসএসবি-র। তারা সিআরপিএফ এবং স্থানীয় পুলিশবাহিনীর সঙ্গে যৌথ অভিযানে সামিল হয়। চার দশক পর বিহার ও ঝাড়খণ্ড এখন মাওবাদীমুক্ত হয়েছে। ছত্তিশগড়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এসএসবি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এবার ওই রাজ্য থেকেও মাওবাদীদের অবলুপ্তি ঘটবে।’
এদিনের এই ম়ঞ্চ থেকেই মাও-দমন অভিযান সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, এই এলাকা থেকে গত সাত বছরে ৮০০ জনেরও বেশি মাওবাদীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বহু মাওবাদীকে নিকেশ করা হয়েছে এবং অসংখ্য মাওবাদী বন্দুক ত্য়াগ করে আত্মসমর্পণ করেছে।
এদিনে অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মনে করেন অমিত শাহ শিলিগুড়ি করিডর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, 'পূর্ব ভারতের সাপেক্ষে এই শিলিগুড়ি করিডর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মহানন্দা এবং তিস্তার মাঝে অবস্থিত এই করিডর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রুট। এই রুটেই উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে দেশের বাকি অংশের যোগাযোগ রক্ষিত হয়।...'
'...এসএসবি জওয়ানরা এই অংশ পাহারা দেন। ফলে, দেশের বাকি অংশের মানুষে নিরাপদে ও নিশ্চিন্তে থাকতে পারে।'
এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এসএসবি জওয়ানদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি মনে করিয়ে দেন, এই জওয়ানরাই দিন-রাত এক করে প্রায় ২,৪৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ ভারত-নেপাল এবং ভারত-ভুটান সীমান্ত পাহারা দেন, ওই সীমান্তগুলি সুরক্ষিত রাখেন।
শাহ বলেন, ‘দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে ভারত-নেপাল ও ভারত-ভুটান সীমান্তের দীর্ঘ ২,৪৫০ কিলোমিটার স্থান নিয়ে একটুও চিন্তিত থাকতে হয় না। কারণ, সেখানে এসএসবি জওয়ানর ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন, সীমান্ত সুরক্ষিত রাখার জন্য।’
বাহিনীর প্রশংসা করে অমিত শাহ আরও বলেন, 'গত এক বছরের মধ্য়ে ৪,০০০-এরও বেশি পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১৬,০০০ কেজি মাদক, ২০৮টি অস্ত্র এবং প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। এসএসবি ১৮৩ জন মানব পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে। যার ফলে ৩০১ জন আক্রান্তকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। যাদের মধ্য়ে ২৩১টি শিশুকন্য়াও ছিল।'