সেদিন দেহ উদ্ধার হয়েছিল। কিন্তু কাটা মুন্ডুর খোঁজ পাচ্ছিল না পুলিশ। অবশেষে আজ, মঙ্গলবার দত্তপুকুর কাণ্ডে সেই কাটা মুন্ডু খুঁজে পাওয়া গেল। এই ঘটনায় গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত জলিলকে ম্যারাথন জেরা করেই নিহত যুবক হজরতের কাটা মুন্ডুর সন্ধান পেল পুলিশ। বামনগাছি স্টেশন সংলগ্ন রেল কোয়ার্টারের পাশের কচুবন দেখিয়ে পুলিশকে জানিয়ে দিল দত্তপুকুর কাটা মুন্ডু ওখানেই আছে। মূল অভিযুক্ত মহম্মদ জলিল গাজির এই কাজে শিউরে উঠেছিলেন মানুষ। দু’সপ্তাহ পর উদ্ধার হল কাটা মুন্ডু। ধৃত মহম্মদ জলিল গাজিকে সঙ্গে নিয়ে আজ বামনগাছির ডোবায় তল্লাশি চালাতেই মিলল কাটা মুন্ডু। আর এই কাটা মুন্ডু উদ্ধারে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নয়া মোড় নিল।
এদিকে আজ পুলিশের সঙ্গে ওই ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য বেরিয়ে বামনগাছির ওই কচুবনে যায় জলিল গাজি। সেখানেই সে পুলিশকে জানায়, ওখানেই রয়েছে হজরতের কাটা মাথা। বেশ কিছুক্ষণ ধরে তল্লাশি চালানোর পর সত্যিই সেখান থেকে হজরতের কাটা মাথা উদ্ধার হয়। সে এক বীভৎস ব্যাপার। যা দেখে অনেকে চোখ নামিয়ে নেন। মৃত হজরত লস্করের মুন্ডু এখন শোকের পরিবেশ তৈরি করেছে। তবে পুলিশকে দেওয়া আগের বয়ান বদলে গেল আজ। জলিল এখন দাবি করেছে, তার স্ত্রীকে যৌন নির্যাতনের চেষ্টা করার জন্যই হজরতকে সে খুন করেছে। কাটা মাথা নিজের হাতে তোলে জলিল। তারপর সেটা ব্যাগে ভরে হাতে করে নিয়ে আসে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গেই।
আরও পড়ুন: বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে বসল জোড়া সিসিটিভি ক্যামেরা, ছুটির দিনেই কাজ সম্পন্ন
অন্যদিকে এই ঘটনা সামনে আসার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন হজরতের মা এবং স্ত্রী। সেই রাতের কথা নিয়ে এবার হজরতের স্ত্রী বলেন, ‘৩টের সময় বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিল। জলিলের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি বলেছিল। তারপর বাড়ি থেকে ফোন করি। রাত ৮টার পর থেকে একেবারে ফোন বন্ধ। ৮টার সময় মায়ের সঙ্গে কথা হয়েছিল।’ হজরত লস্করের এমন পরিণতি দেখে তাঁর মায়ের বক্তব্য, ‘বলেছিল মা রাস্তায় আছি, আসছি। বলার পরই ফোন সুইচ অফ হয়ে যায়। তারপর থেকে আমার ছেলে আর কথা বলেনি। জলিল কোনও দিনও আমার বাড়িতে আসেনি।’
এছাড়া গত ৩ ফেব্রুয়ারি দত্তপুকুর থানার বাজিতপুরে কৃষি জমির পাশের মাঠে একটি গলা কাটা দেহ উদ্ধার হয়। গেঞ্জি দিয়ে বাঁধা ছিল হাত–পা, শরীরের একাংশ পোড়া এবং নিম্নাঙ্গ ক্ষতবিক্ষত। ওই খালে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালালেও উদ্ধার হয়নি কাটা মুন্ডু। দেহের হাতে থাকা উল্কির সূত্র ধরেই মেলে মৃত যুবকের পরিচয়। গত বুধবার জম্মুর সাম্বা থেকে মূল অভিযুক্ত মহম্মদ জলিল গাজিকে গ্রেফতারের পরই খুলতে শুরু করল রহস্যের জট। সম্প্রতি জলিল পুলিশের জেরায় জানিয়েছে, তার স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ছিল হজরতের। রাগের বশে হজরতকে খুন করেছে সে। বারবার বারণ করা সত্ত্বেও সে কথা শোনেনি। বরং তার স্ত্রী সুফিয়াকে যৌন নির্যাতনও করত হজরত।