নিজের গড় বলে পরিচিত হলেও সমবায় নির্বাচনে বারবার হেরেছে বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচনেও হারতে হয়েছে একাধিক আসন। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও কয়েকটি বাদ দিলে বাকি সবেতেই ধরাশায়ী গেরুয়া শিবির। এবার সেই পঞ্চায়েতও ধরে রাখতে পারল না বিজেপি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গড়েই বিজেপির পঞ্চায়েত ভেঙে পড়ল এবং তৃণমূল কংগ্রেসে সদস্যরা যোগ দেওয়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে গেল ঘাসফুল শিবির। যেখানে লোকসভা নির্বাচনে দুটি আসন কাঁথি এবং তমলুক বিজেপির দখলে রয়েছে। সেখানে এবার বিজেপির জেতা পঞ্চায়েত ভেঙে চলে গেল তৃণমূল কংগ্রেসে। যা একপ্রকার সেটব্যাক।
এদিকে শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুকে বিজেপির কাছ থেকে হাতছাড়া হতে চলেছে ভগবানপুর ২ নম্বর ব্লকের মুগবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত। এটা জিতেছিল বিজেপি। কিন্তু সেখানে সোমবার দিনই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন দুই পঞ্চায়েত সদস্য। সুতরাং সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল জোড়াফুল শিবির। এবার মুগবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতবদল শুধু সময়ের অপেক্ষা। এই পঞ্চায়েতের ২১টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছিল ১১টি আসন। আর তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ১০টি আসন। এবার বিজেপির থেকে দুই সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় ১২টি আসন হয়ে গেল শাসকদলের। সেখানে বিজেপির কমে ৯।
আরও পড়ুন: ‘দু’টি পৃথক মহকুমা তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে’, গঙ্গাসাগর থেকে বড় ঘোষণা করলেন মমতা
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন মুগবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই সদস্য জয়দেব বেরা এবং কাকলি বেরা। তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে তাঁরা জোড়াফুল পতাকা হাতে তুলে নেন। এই দুই সদস্য এতদিন ভগবানপুর ২ ব্লকের মুগবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি হয়ে ছিলেন। কিন্তু এবার তাঁরা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলে সহজে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল জোড়াফুল শিবির। তার জেরে পঞ্চায়েত হাতছাড়া হতে চলেছে বিজেপির বলে জানা যাচ্ছে। তবে দুই পঞ্চায়েত সদস্যের পাশাপাশি বিজেপির স্থানীয় বহু নেতা–কর্মী সদলবদলে যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে।
এই দুই পঞ্চায়েত সদস্যের হাতে জোড়াফুল পতাকা তুলে দেন পূর্ব মেদিনীপুরের সভাধিপতি উত্তম বারিক। উত্তম বারিক এই ঘটনা নিয়ে বলেন, ‘বিজেপিতে উন্নয়ন বাদ দিয়ে বাকি সব কাজ হয়। তাই উন্নয়নের কাজ করতে মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসে আসছেন এবং আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।’ আর কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডলের বক্তব্য, ‘বিজেপির সদস্যদের ভয় দেখিয়ে এই কাজ করা হচ্ছে।’ আর এই দুই পঞ্চায়েত সদস্যদের কথায়, ‘পদ্ম প্রতীকে জয়লাভ করার পর উন্নয়নের কাজ হচ্ছিল না। ফলে আমাদের এলাকা পিছিয়ে পড়ছিল। দলের মধ্যেও গোষ্ঠী কোন্দল বাড়ছে। তাই আমরা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলাম।’