২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মাটি কামড়ে লড়াই করেছিলেন তিনি। কিন্তু তার পরও অধিকারী গড়ে পরাজিত হয়েছিলেন। তবে তাঁর এই লড়াই সবার চোখে পড়ে ছিল। যা এড়িয়ে যায়নি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখও। তাই পরাজয়ের পর তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ‘বাঘের বাচ্চা’ বলে পিঠ চাপড়ে ছিলেন। আর এবার সেই নেতাই মুখ্যমন্ত্রীর রোষানলে পড়লেন। হ্যাঁ, তিনি উত্তম বারিক। তাই এখন নিজেকে একটু গুটিয়ে নিলেন পটাশপুরের বিধায়ক তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক। মঙ্গলবার কোলাঘাটে দলীয় বৈঠকে নিশ্চুপ ছিলেন উত্তম।
দু’দিন আগে বিধানসভায় নিজের কক্ষে পূর্ব মেদিনীপুরের ৯ জন দলীয় বিধায়ককে নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি নির্দেশ দেন, বিরোধ মিটিয়ে নিতে হবে। আর কাঁথি এবং তমলুক দুই সাংগঠনিক জেলায় সব পদাধিকারীদের নিয়ে কোলাঘাটে বৈঠক করতে হবে। আর কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচন নিয়ে দলীয় স্তর থেকে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে হবে। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক উত্তম বারিক। সেখানেই আয়ের উৎস নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর রোষানলে পড়েন তিনি। এখন দিঘায় সফরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখানে বাকি বিধায়ক এবং নেতাদের দেখা গিয়েছে। শুধু দেখা গেল না বিধায়ক অখিল গিরি ও উত্তম বারিককে।
আরও পড়ুন: উচ্চমাধ্যমিকের দু’বছর পর নম্বর বেড়ে লেটার মার্কস, ক্যানসার আক্রান্ত ছাত্রকে বিচার কলকাতা হাইকোর্টের
এই বিষয়টি নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী যখন দিঘায় এসেছেন তখন উত্তম বারিক চলে যান কোলাঘাটে। অখিল গিরিও একই পথে হেঁটেছেন। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই রাজ্য কমিটির নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আশিস চক্রবর্তীর নেতৃত্বে শুরু হয় কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের দলীয় প্রার্থী তালিকা তৈরির বৈঠক। যেখানে বৈঠকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উত্তম বারিক ‘চুপচাপ’ ছিলেন বলে সূত্রের খবর। তবে অখিল–উত্তমকে পাশে রেখেই যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন রাজীব ও আশিস। এই বিষয়টি সবাই দেখেছেন। কেন এমন নিঃশব্দ বিপ্লব? উঠছে প্রশ্ন।
অখিল এখানে আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন। কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচন দু’টি সাংগঠনিক জেলা মিলিয়ে হচ্ছে। তাই এই নির্বাচনের আর্থিক দায়িত্ব উত্তম বারিক নিক বলে প্রস্তাব রাখেন অখিল। তখন মুখ খুলে উত্তম বারিক বলেন, ‘যেখানে যা প্রয়োজন হবে নিশ্চিত আমি পাশে থাকব।’ ব্যস, কথা ওইটুকুই। অখিল গিরি আগে থেকে খবর রেখেছিলেন বলেই বল উত্তমের কোর্টে পাঠিয়ে দেন। উত্তমও বিষয়টি বুঝতে পেরেছিলেন বলেই ডিফেন্স করে ইয়র্কার লেন্থের বল খেলে উইকেট বাঁচান। তবে জেলার নেতারা সবটাই উপভোগ করলেন।