পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় একটি বইমেলা হয়। বহু বছর ধরেই তা হয়ে থাকে। যেখানে ভিড় জমান স্থানীয় কবি–সাহিত্যিক–লেখক থেকে বইপ্রেমীরা। এই জেলা বইমেলার উদ্বোধন করার ক্ষেত্রে স্থানীয় রাজনীতিবিদরাও এসে থাকেন। এবারও যার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে একটা বিপরীত ছবি ফুটে উঠেছে। সেটি হল– এই বইমেলায় শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক ও জনপ্রতিনিধিরা আমন্ত্রিত হয়েছেন। তবে ডাক আসেনি স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিকের। কারণ তিনি বিরোধী দলের বিধায়ক বলে অভিযোগ। এমনকী তাঁর নাম আমন্ত্রণপত্রে ছাপাও হয়নি বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই জেলার রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বইমেলা আগামীকাল রবিবার থেকে শুরু হবে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বইমেলা হিসাবেই তার পরিচিতি। এই বইমেলা চলবে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। খেজুরি–১ ব্লকের হেঁড়িয়া শিবপ্রসাদ ইনস্টিটিউশনের মাঠে বইমেলা বসবে। তার জন্য তুঙ্গে উঠেছে প্রস্তুতি। সঙ্গে রাজনীতি এখানে সরগরম করে তুলেছে বাতাবরণ। এই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বইমেলা কমিটির পরিচালনায় জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসনের অন্তর্গত রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এই মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। যার উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী।
আরও পড়ুন: চার মাস বন্ধ থাকবে বারাসত উড়ালপুল, ডিসেম্বর থেকে সংস্কারের কাজ শুরু, যানজট কি হবে?
এখানে মন্ত্রীর পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসের তাবড় নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে খবর। জেলার নেতা হলেও তাঁরা প্রথমসারির বটেই। জেলা পরিষদের আসনে জয়ী হয়ে সভাধিপতি নির্বাচিত হন উত্তম বারিক। তিনিও এখানে থাকবেন। সেখানে ডাক পেলেন না বিজেপির বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক। তিনি এখানের স্থানীয় বিধায়ক। বইমেলার উদ্বোধনে অতিথি হিসেবে ডাক পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। বিজেপির অভিযোগ, রাজনীতিতে ন্যূনতম সৌজন্যবোধের দেখায় না তৃণমূল কংগ্রেস। আগেও নানা কর্মসূচি নিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তারা। বিরোধী বিধায়ক অথবা সাংসদদের ব্রাত্য রাখা তৃণমূল কংগ্রেসর রেওয়াজ।
জেলা বইমেলার উদ্বোধনে এমন বিপরীত ছবি দেখা যাওয়ায় জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কেন বিজেপি বিধায়ককে ডাকা হল না? তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এই বিষয়ে বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক বলেন, ‘সরকারি বইমেলাকে তৃণমূল কংগ্রেসের অনুষ্ঠান বানাতে চাইছে। তাই স্থানীয় বিধায়ক হিসেবে আমার নাম আমন্ত্রণপত্রে ছাপার সৌজন্য দেখায়নি। এটা বইপ্রেমীদের কাছে নেতিবাচক বার্তা নিয়ে আসবে।’ আর পাল্টা জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিকের বক্তব্য, ‘এটা জেলা পরিষদ বা তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও কর্মসূচি নয়। প্রশাসনের উদ্যোগে এই বইমেলা হচ্ছে। আমন্ত্রিতদের নামের তালিকা চূড়ান্ত করেছে প্রশাসন।’