বর্ধমান স্টেশনে গত ১২ অক্টোবর পদপিষ্ট হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার পাঁচ সদ্যস্যের একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। এদিকে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার মিলিন্দ দেউস্কর বর্ধমান স্টেশন পরিদর্শনে যান গতকাল। পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনাটিকে 'দুঃখজনক' আখ্যা দিলেও তিনি জানান, যে সিঁড়িতে এই ঘটনা ঘটে, তা আর চওড়া করার উপায় নেই।
গতকাল বর্ধমান স্টেশনে গিয়ে পূর্ব রেলের জিএম বলেন, 'ভিড় নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে। এই স্টেশন খুব পুরনো। এত যাত্রীর জন্য তৈরি ছিল না। এখানে ১৬৭টি ট্রেন চলে। এই স্টেশনের প্ল্যাটফর্মগুলি খুব একটা চওড়া নয়। স্টেশনের সিঁড়িগুলি আর চওড়া করার উপায় নেই। আগামী সাত-আট দিনের মধ্যে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি করার চেষ্টা চলছে। পাঁচ সদ্যস্যের একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। তাতে বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকেরা রয়েছেন। তবে প্রাথমিক ভাবে এখনও পর্যন্ত গাফিলতির কোনও তথ্য সামনে আসেনি। যদিও সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।'
উল্লেখ্য, রবিবার বিকেল ৫টা ২০ মিনিট নাগাদ বর্ধমান স্টেশনের ৪ ও ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে পদপিষ্ট হওয়ার মতো এই ঘটনা ঘটেছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বর্ধমান স্টেশনের তিনটি প্ল্যাটফর্মে একসঙ্গে ট্রেন দিয়েছিল। সংকীর্ণ সিঁড়ি দিয়ে নিজেদের প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার সময় যাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়।
প্রসঙ্গত, শতাব্দীপ্রাচীন বর্ধমান স্টেশনে বিগত কয়েক বছরে একাধির দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর আগে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি স্টেশন লাগোয়া আরএমএস বিল্ডিংয়ের চাঙড় ভেঙে পড়েছিল। ২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর স্টেশনের ১৩৩ বছরের প্রাচীন জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়েছিল। তাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৩ জন। তার আগে ২০২০ সালের ৭ জুন স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে পোর্টিকোর ফলস সিলিং ভেঙে পড়ে আহত হন তিনজন। ২০২০ সালেরই ৪ জানুয়ারি স্টেশনের প্রবেশপথে অনুসন্ধান কেন্দ্রের সামনের বারান্দার একাংশ ধসে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল একজনের। এদিকে গত রবিবারের মতো ঘটনা ঘটেছিল ২০১৯ সালের ৮ নভেম্বর। সেবারও ওভারব্রিজে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। আহত হয়েছিলেন ১৫ জন।