কখনও দেরি করে আসা, আবার কখনও স্কুলে না আসার অভিযোগ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রায়ই শোনা যায়। শিক্ষকদের কাজে ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে এর আগে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে পড়ুয়া অভিভাবকদের। আর এবার শিক্ষকদের কাজে ফাঁকি দেওয়া রুখতে আরও কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে প্রশাসন। শিক্ষকদের জন্য একটি বিশেষ অ্যাপ আনা হচ্ছে। যার মাধ্যমে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি মেনেই হাজিরা দিতে হবে শিক্ষকদের। তাতে শিক্ষকদের ফাঁকিবাজ রোখা সম্ভব হবে বলে মনে করছে জেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুন: প্রাথমিকের ছাত্রীকে দিয়ে জুতো পরিষ্কার শিক্ষিকার, লস্করপুরে অভিভাবকদের ঘেরাও
প্রাথমিকভাবে উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন এই অ্যাপ আনতে চলেছে। জানা যাচ্ছে, পুজোর ছুটির পর স্কুল খুললেই এই অ্যাপ চালু করা হবে। প্রত্যেক শিক্ষকের মোবাইলে সেই অ্যাপ থাকবে। তাতেই বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা দিতে হবে। শিক্ষকদের ফাঁকিবাজ নিয়ে অভিযোগের পাহাড় জমছিল উত্তর দিনাজপুর জেলা শিক্ষা দফতরে। এমনকী প্রায়ই বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভেও সামিল হতে দেখা গিয়েছিল পড়ুয়া থেকে শুরু করে অভিভাবকদের। তারপরই জেলা শিক্ষা দফতরের তরফে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রত্যেক শিক্ষককে নিজেদের মোবাইলে বাধ্যতামূলকভাবে এই অ্যাপ ইন্সটল করতে হবে। এরপর স্কুলে পৌঁছে সেই অ্যাপ খুলে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে তাতে হাজিরা দিতে হবে। শিক্ষকরা স্কুলে পৌঁছে হাজিরা দিচ্ছেন কিনা তা বোঝার জন্য অ্যাপের সঙ্গে থাকবে জিপিএস। ফলে শিক্ষকরা স্কুল চলাকালীন কোথায় থাকছেন বা যাচ্ছেন সবই বোঝা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, উত্তর দিনাজপুরে মোট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১,৪৬৮ টি। আর মোট শিক্ষক রয়েছে সাড়ে ৭ হাজার। যদিও শাসক দল দাবি করছে যে জেলায় আর শূন্যপদ নেই। তবে বিরোধীদের দাবি, এখনও জেলায় প্রায় ১৫০০টি শূন্যপদ রয়েছে। তবে এই অ্যাপ চালু হলে পড়ুয়ারা উপকৃত হবেন বলেই মনে করছেন অভিভাবকরা।
এবিষয়ে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক জানিয়েছেন, অনেক অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল শিক্ষকদের অনুপস্থিতি নিয়ে। তাই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অভিভাবক থেকে শুরু করে সকলেই। তবে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিরোধী শিবির। তবে এনিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ, শাসক দলের সঙ্গে যুক্ত অনেক শিক্ষক স্কুলে না গিয়ে রাজনৈতিক কাজকর্মে জড়িত থাকেন। এখন তারা আর কাজে ফাঁকি দিতে পারবেন না। এটা খুব ভালো পদক্ষেপ।