প্রকৃতির ভয়াবহ রূপে যখন উত্তরবঙ্গ জুড়ে চলছে তাণ্ডবলীলা, ঠিক তখনই দক্ষিণবঙ্গের দামোদরে ঘটল এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। ভয়ঙ্কর স্রোতে ভেসে গিয়েও প্রাণে বেঁচে ফিরলেন এক বৃদ্ধা। প্রায় ৪৫ কিলোমিটার ভেসে যাওয়ার পর জীবিত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই অলৌকিক বেঁচে যাওয়া ঘিরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
আরও পড়ুন: প্রতিমা নিরঞ্জনে একের পর এক দুর্ঘটনা! হুগলি-হাওড়া-বর্ধমানে মৃত্যু ৪ জনের
ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমান জেলার রায়না ব্লকের হিজলনা জাকতা গ্রামের। সেখানকার বাসিন্দা মাতুরি টুডু (৬৫) রবিবার দুপুরে একাই দামোদর নদে স্নান করতে নেমেছিলেন। কিন্তু নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি ও ডিভিসি থেকে জল ছাড়ার কারণে তখন নদীর স্রোত ছিল উত্তাল। মুহূর্তের মধ্যে ভারসাম্য হারিয়ে ভেসে যান তিনি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুক্ষণ পর সন্ধের দিকে জামালপুর থানার মুইদিপুর এলাকায় নদীর ঘাটের কাছে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকারে ছুটে যান গ্রামবাসীরা। তখন দেখা যায়, নদীর জলে এক বৃদ্ধা প্রাণপণ লড়ছেন স্রোতের সঙ্গে। খবর যায় থানায়। স্থানীয় মানুষ ও পুলিশ মিলে তৎপরতার সঙ্গে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে জামালপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ জলে থাকার কারণে তিনি প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। পরে চিকিৎসার জন্য তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
হাসপাতালের শয্যা থেকে মাতুরি জানান, দামোদরে স্নান করতে নেমেছিলাম, হঠাৎ জলের স্রোত বেড়ে গেল। টের পাওয়ার আগেই ভেসে গিয়েছিলেন। কিছু একটা ধরে কোনও মতে টিকে ছিলেন, তারপর গ্রামের লোকজন তাঁকে তুলে আনে।
ঘটনার বিষয়ে জামালপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি মেহেমুদ খান বলেন, স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার না করলে হয়তো প্রাণে বাঁচতেন না। ভাগ্য সহায় ছিল বলেই তিনি এখন সুস্থ আছেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ তাঁকে পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃদ্ধাকে উদ্ধার করার পর তাঁকে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। হিজলনা গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে বিষয়টি অবিশ্বাস্য। প্রবল স্রোতের নদীতে টানা ৪৫ কিলোমিটার ভেসে গিয়েও জীবিত থাকা সত্যিই এক অলৌকিক ঘটনা বলে মনে করছেন তাঁরা।