শহরের ই–বর্জ্য কেনার কথা ঘোষণা করেছে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু গ্রামে কী হবে? এই প্রশ্নের উত্তর এখন অনেকেই জানতে চাইছেন। অধিকাংশ গ্রামেই কঠিন, তরল এবং প্লাস্টিক বর্জ্য নিষ্কাশনের করার ইউনিট তৈরি হয়েছে। আবার কয়েকটি খারাপ বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম পড়ে আছে। তার ব্যবস্থা কী হবে? এই প্রশ্নও উঠছে। তবে এসব সমস্যার সমাধান করতে সোনারপুরে রাজ্যের প্রথম বৈদ্যুতিন বা ই–বর্জ্য নিষ্কাশন ইউনিট চালু হতে চলেছে। রাজ্য সরকারের টাকায় এই নয়া ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে শুরুর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
এই ই–বর্জ্য নিষ্কাশন ইউনিট চালু হলে শহরের পাশাপাশি গ্রামবাংলার ই–বর্জ্য এখানে চলে আসবে। সুতরাং গোটা রাজ্য বেঁচে যাবে দূষণ থেকে। কারণ এই ই–বর্জ্য অনেকে ফেলে দিতে বা বিক্রিওয়ালাকে বেচে দিতেন। সেগুলি হাতফেরতা হয়ে চলে যেত স্থানীয় কালোয়ারের কাছে। তারা তা কাজের জিনিস বের করে নিয়ে বাকি অংশ পুড়িয়ে ফেলে। যা থেকে বায়ুদূষণ হয় বলে অভিযোগ। এবার রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম—মোবাইল, টিভি, কম্পিউটার–সহ একাধিক ই–বর্জ্য সংগ্রহ করে এখানে আনা হবে। সেগুলি পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার চেষ্টা করা হবে। এই প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ১০ কোটি টাকা। রোজ ৬ মেট্রিক টন বর্জ্য পুনর্বব্যবহারযোগ্য করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: হাতি খুনের কারণ কী? এবার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট
এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। জমি ও টাকা রাজ্য সরকার দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। আর মেশিন ও অন্যান্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এক বেসরকারি সংস্থাকে। এভাবেই গোটা প্রকল্প বাস্তবে পরিণত করার কাজ শুরু হচ্ছে। এই বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সাত বছরের চুক্তি হয়েছে বলে সূত্রের খবর। একাধিক জায়গা থেকে বৈদ্যুতিন সামগ্রী সংগ্রহ করে এখানে এনে তিনটি কাজ করা হবে। এক, সরঞ্জাম পৃথকীকরণ দুই, ধাতু ও অন্য সামগ্রী বের করা তিন, আর সেগুলিকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলার কাজ করা হবে।
এই ই–বর্জ্য নিষ্কাশন ইউনিট চালু হলে বেশকিছু কর্মসংস্থান হবে। তার সঙ্গে রাজ্যের আয়ও হবে। সেক্ষেত্রে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। ই–বর্জ্য নিষ্কাশন ইউনিট বেসরকারি সংস্থার হাতে থাকলেও এই প্রকল্প থেকে রাজ্যের আয় হবে বলে সূত্রের খবর। নবান্নের এক অফিসার বলেন, ‘এই প্রকল্পটি রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের হলেও ওয়েবেলের তত্ত্বাবধানে গোটা বিষয়টি কার্যকর করা হবে। ১০.৭২ একর জমিতে এই প্রকল্প হবে। যার ফলে ই–বর্জ্যের সমস্যার সমাধান হবে। এই জমিতে একটি ব্যাটারি প্রস্তুতকারী সংস্থা তাদের বিল্ডিং গড়ে তুলেছে। বাকি জায়গায় হবে ই–বর্জ্য নিষ্কাশন ইউনিট।