বাংলায় এখন হাতির সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে বলে চিন্তিত রাজ্য সরকার। কারণ গজরাজের সংখ্যা বাড়লে তারা তাণ্ডব করতে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পড়ে। লোকালয়ে চলে আসায় ফসল নষ্ট থেকে শুরু করে প্রাণহানির ঘটনা পর্যন্ত ঘটে থাকে। এই অবস্থায় হাতিদের যদি নিয়েও আসা হয় তাহলে এত হাতি রাখা হবে কোথায়? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বন মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, এখন পশ্চিমবঙ্গে হাতির সংখ্যা ৮০০। যেখানে ২৫০ সংখ্যার মধ্যে থাকার কথা। ২০২৩ সালেও বাংলায় হাতির সংখ্যা ৬৫০ ছিল। সেটা হঠাৎই মাত্র এক বছরের মধ্যে ৮০০ সংখ্যায় পৌঁছে গেল। তাই বিষয়টি চিন্তায় পড়েছে রাজ্য সরকারও।
গ্রামবাংলায় প্রায়ই লোকালয়ে হাতির দল চলে আসে। কখনও খাবারের সন্ধানে, আবার কখনও পথ হারিয়ে। তখন বাড়িঘর ভাঙচুর, ফসল নষ্ট, খাবার খেয়ে নেওয়া এবং হামলা করার জেরে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। তাই হাতির সংখ্যা বাড়লে নানারকম সমস্যায় পড়তে হয় প্রশাসনকে। এখন সেটাই ভাবিয়ে তুলেছে রাজ্য সরকারকে। বন দফতরের কর্তাদের শঙ্কা, হাতির সংখ্যা যখন অনেকটা বেড়ে যায় তখন খাবারের খোঁজে হাতিদের জনবসতিতে ঢুকে পড়ার প্রবণতা বাড়ে। এমনকী চোরাশিকারদের সক্রিয়তা বাড়ে। আর হাতি জঙ্গলে মেরে তার দাঁত, নখ, চামড়া সংগ্রহ করে বিশাল দামে বিক্রি করার ঘটনা বাড়ে।
আরও পড়ুন: সম্ভলের ঘটনা দেখে পুলিশের প্রশংসা গৃহবধূর, রেগে গিয়ে তিন তালাক দিলেন স্বামী
এই আশঙ্কার পরিস্থিতি সামাল দিতে উত্তরবঙ্গ এবং রাঢ়বঙ্গে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে এখন আগের থেকে হাতির আক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে বাংলায়। সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩ সালে হাতির আক্রমণে রাজ্যে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আর ২০২৪ সালে ওই সংখ্যাই কমে দাঁড়িয়েছে ১৩টি। বন দফতরের কর্মীদের সচেতনতামূলক প্রচারের জন্যই এটা কমেছে বলে মনে করা হচ্ছে। দু’দিন আগে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনেও হাতির সংখ্যা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেন বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা।
হাতির সংখ্যা যে বেড়েছে তা নিয়ে রাজ্য সরকারকে তথ্য দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার বলে সূত্রের খবর। এখন বাড়তি সতর্কতা নিতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। এই বিষয়ে রাজ্য বিধানসভা চত্বরে বীরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘আমাদের রাজ্য ২৫০ হাতি থাকার কথা। আর তা এখন বেড়ে হয়েছে ৮০০ হাতি। এখন হাতি এবং মানুষকে নিরাপদ রাখার জন্য আমাদের সচেতনতা আরও বাড়াতে হবে। বনমন্ত্রী হিসেবে আমি চাইব, জঙ্গল আরও বাড়ুক। বন দফতর ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে, যাতে গাছ কাটা রোখা যায়।’