বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > অন্যান্য জেলা > জলঙ্গির জলে-জঙ্গলে ভ্রমণ চৌধুরানি বজরায়

জলঙ্গির জলে-জঙ্গলে ভ্রমণ চৌধুরানি বজরায়

চৌধুরানি বজরা।

নদীর নাম জলঙ্গি। নদিয়ার এই নদী রূপে টেক্কা দেয় রাজ্যের আর পাঁচটি নদীকে। মুর্শিদাবাদের পদ্মা থেকে জন্ম নিয়ে ২২০ কিমি পথ উজিয়ে জলঙ্গি নদিয়ার মায়াপুরে মিশেছে গঙ্গার সঙ্গে। বলা যেতে পারে এ নদী গঙ্গা-পদ্মার যোগাযোগের দূত। শীতকালে এর জল পান্না সবুজ। দু'পাশের ঘন ছায়ানিবিড় গাছ-গাছালিতে নদীর রঙে তুলির ছোঁয়া।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দেবী চৌধুরাণী বইয়ের আকারে প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৮৪-তে। তারপর নদীমাতৃক বাংলার নদ-নদী-খাল-বিল দিয়ে বয়ে গিয়েছে কত জল, পেরিয়ে গিয়েছে ১৩৭টি বছর। কিন্তু দেবী চৌধুরাণী-র মত একটি বজরা তৈরি হয়নি। গ্রাম বাংলার সবুজ বনানীর বুক চিরে বহতা নদীর জলে যে বজরা তরতর ছুটে বেড়াবে, প্রকৃতির অপূর্ব রূপ দেখে মোহিত হবে মানুষ, এমন ভাবনা যদিও বা কখনও দানা বাঁধে, বাস্তবে তা হয়ে ওঠেনি। অবশেষে সেই অভাব মিটিয়েছে 'চৌধুরানি'। কাঠের এই বজরা এই রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় একমাত্র জলযান যা তৈরি হয়েছে পর্যটকদের কথা মাথায় রেখেই।

বজরার এই ঘরে বসে নদী বক্ষে ভ্রমণ করুন, চুটিয়ে আড্ডা দিন। একসঙ্গে ১০-১৫ জন এই ঘরে বসে আড্ডা দিতে পারবেন।
বজরার এই ঘরে বসে নদী বক্ষে ভ্রমণ করুন, চুটিয়ে আড্ডা দিন। একসঙ্গে ১০-১৫ জন এই ঘরে বসে আড্ডা দিতে পারবেন।

নদীর নাম জলঙ্গি। নদিয়ার এই নদী রূপে টেক্কা দেয় এই রাজ্যের আর পাঁচটি নদীকে। মুর্শিদাবাদের পদ্মা থেকে জন্ম নিয়ে ২২০ কিমি পথ উজিয়ে জলঙ্গি নদিয়ার মায়াপুরে মিশেছে গঙ্গার সঙ্গে। বলা যেতে পারে এ নদী গঙ্গা-পদ্মার যোগাযোগের দূত। শীতকালে এর জল পান্না সবুজ। দু'পাশের ঘন ছায়ানিবিড় গাছ-গাছালিতে নদীর রঙে তুলির ছোঁয়া। প্যালেট থেকে রং নিয়ে আঁকা ক্যানভাস। তার বুকে যখন ভুটভুট শব্দে মসৃণ গতিতে ছুটে চলে চৌধুরানি বজরা তখন নীল আকাশ আর সবুজ জলে মন মিলেমিশে যায়। এমন রোমাঞ্চ সত্যিই বড় বিরল।

জলঙ্গি এসে মিশেছে গঙ্গার সাথে।
জলঙ্গি এসে মিশেছে গঙ্গার সাথে।

বজরা দাঁড়িয়ে থাকে কদমতলার ঘাটে। এখন একে বিসর্জনের ঘাটও বলে। সেখানে বিশাল কংক্রিটের চাতাল। তাতে বড় বড় লেখা 'নদী বাঁচান, জীবন বাঁচান' --সেভ জলঙ্গি। রাজ্যের বহু নদ-নদী-খাল-বিলের মত বিপন্ন এই অপরূপ নদীটিও। ফলে এই নদী বাঁচানোর জন্য গড়ে উঠেছে নদী সংসদ। চলছে নদীকে বাঁচানোর সচেতনতামূলক প্রচার। এই ঘাঁটেই বাঁধা থাকে চৌধুরানি। এখান থেকে ২১ কিমি পথ পাড়ি দিলে গঙ্গা-জলঙ্গির মোহনা। সেখানে একদিকে স্বরূপনগর অন্যদিকে মায়াপুর। এখানেই দেখতে পাবেন দুই নদীর দুই রঙের বিভাজন। জলঙ্গির সবুজ রং গিয়ে মিশেছে গঙ্গার ধূসর রঙে। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি, এই সময়ে এই রঙের খেলা বোঝা যায় সবচেয়ে ভালো।

সব্জে রঙের জল জলঙ্গির, গঙ্গার জল ঘোলা রঙের।
সব্জে রঙের জল জলঙ্গির, গঙ্গার জল ঘোলা রঙের।

২১ কিমি পথ গিয়ে আবার সন্ধ্যায় ফিরে আসা। সময় লাগে সাকুল্যে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা। ইচ্ছা করলে আরও দূরে যাওয়া যায়, মায়াপুর হয়ে, গঙ্গা ধরে একেবারে পূর্বস্থলির পাখিরালয় চুপি চর পর্যন্ত। শীতে সেই ভ্রমণ অতুলনীয়। দেখা মেলে প্রচুর পরিযায়ী পাখির। ভাগ্য সহায় হলে এখানকার গঙ্গায় দেখে ফেলতে পারেন অতি বিরল গাঙ্গেয় ডলফিনদেরও। গাঙ্গেয় ডলফিনদের সহজাত আবাসভূমি গঙ্গার এই অঞ্চলেই। নবদ্বীপ থেকে কাটোয়া পর্যন্ত বিস্তৃত গঙ্গার এই এলাকায় অল্প পরিমাণে হলেও তাদের বংশবৃদ্ধি হচ্ছে।

জলঙ্গির বুকে ভেসে বেড়াতে বেড়াতে আপনার মন কোনও এক কল্পলোকে পৌঁছে যাবে।
জলঙ্গির বুকে ভেসে বেড়াতে বেড়াতে আপনার মন কোনও এক কল্পলোকে পৌঁছে যাবে।

চৌধুরানি বজরা দেখতেও অনেকটা দেবী চৌধুরাণীর বজরার মতোই। সেই বজরা ঘুরে বেড়াত ত্রিস্রোতা (অনেকের মতে আজকের তিস্তা নদীই সেদিনের ত্রিস্রোতা) নদীতে। উপন্যাসের সেই বজরা ছিল নানা বর্ণে চিত্রিত। তাতে আঁকা ছিল অনেকরকমের মুরদ। পিতলের হাতল, হাঙরের মুখ এসব ছিল রুপোর গিলটি করা। ছাদে ছিল নানা চিত্রে সজ্জিত গালিচা। চৌধুরানি বজরাতেও রয়েছে বাঁধাই করা নানা ছবি, যামিনী রায়ের আঁকা ছবির প্রিন্ট আউট ফ্রেম করে আটকানো। বজরার ভিতরে চারটি গদি দেওয়া বসার চমৎকার ব্যবস্থা। তাতে অনায়াসে ১০-১৫ জন বসতে পারবেন। তবে দুই থেকে ছয় জন হলে সবচেয়ে ভালো। সেক্ষেত্রে বজরার ভাড়া মাথাপিছু একটু বেশি পড়লেও প্রকৃতি নিরীক্ষণ ঢের বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

জলঙ্গির বুকে সূর্যাস্ত।
জলঙ্গির বুকে সূর্যাস্ত।

রান্না করা খাবার তুলে নেওয়া হয় বজরায়। মাঝখানে কোনও সময়ে জলঙ্গির গায়ে কোনও ছায়া সুনিবিড় গাছের নীচে চলবে বনভোজন থুরি জলভোজন। ভাত-ডাল-বাঁধা বা ফুলকপির ডালনা-চিকেন কারি, বললে কৃষ্ণনগরের বিখ্যাত মিষ্টির আয়োজনও থাকে।

নদীপথে পড়বে একটি রেল সেতু। লাল ইটের পিলারের উপর সাদা রঙের লোহার খাঁচা। সন্ধ্যায় সূর্যের পড়ন্ত আলোয় সেই সেতুর প্রতিকৃতি জলঙ্গির জলে অপূর্ব দৃশ্য তৈরি করে। আর রয়েছে দু'ধারের গ্রাম, পাটখেত, এই সময় গেলে দেখতে পাবেন নদীতে পাট জাগ দেওয়া হচ্ছে। পাট ধোয়াকেই বলে জাগ দেওয়া। কোথাও নদী থেকে উঠে গিয়েছে বাঁধানো সিঁড়ি। সেই সিঁড়িতে বসে গল্পে মজেন গ্রামের মহিলারা। কত সুখ-স্মৃতির গল্প। শহুরে সভ্যতা থেকে বহুদূরের একান্ত আপন নিজেদের রোজনামচার ঝুলি। কান পাতলে আপনি শুনতেও পারেন, ছলাৎ ছল নদীর গল্প।

কী ভাবে যাবেন-- কলকাতা থেকে বাসে অথবা ট্রেনে কৃষ্ণনগর। পৌঁছে যাবেন সকাল দশটায় মধ্যে। স্টেশন থেকে টোটো নিয়ে সোজা বিসর্জন বা কদমতলা ঘাট। ভাড়া পড়বে ৭০-৮০ টাকা (রিজার্ভ)। বজরায় সারাদিনের ভাড়া ৪৫০০-৫০০০ টাকা।

বাংলার মুখ খবর

Latest News

‘আবগারি দুর্নীতির ৫০ কোটি তো BJP-র’, কেজরি জেলে থাকলে নড্ডা নয় কেন? তোপ অভিষেকের জলপাইগুড়িতে বিজেপির বুথ অফিসে ঢুকে পড়লেন তৃণমূল প্রার্থী, কী ঘটল সেখানে?‌ PBKS হারলেও নায়ক আশুতোষ, কে এই প্লেয়ার? যাঁর ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ সূর্য, বুমরাহরাও ‘অনেক মুসলিমের নাম নেই তালিকায়’, UP-তে বুথ দখলের অভিযোগ BJP-র নামে একটি IPL-এ টেল-এন্ডার হিসেবে সব থেকে বেশি রান আশুতোষের, দেখুন সেরা ৫-এর তালিকা ভয়ানক দুর্ঘটনার মুখোমুখি দিব্যাঙ্কা, ভেঙেছে হাতের দুটি হাড়, করাতে হবে অপারেশন একটু পরেই মাধ্যমিক রেজাল্ট ঘোষণা ঝাড়খণ্ড বোর্ডের, কীভাবে দেখবেন? পাশমার্ক কত? 'আমি তো সংসার করছিই...' করেননি বিয়ে, তাও কেন এমনটা জানালেন মিমি? রিপোর্ট: বাস্কেটবল খেলার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, ‘জিগরা’র জন্য আর কী কী করছেন আলিয়া ‘‌নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ কাজ করছে না’‌, ভেটাগুড়ির হামলায় সুর চড়ালেন উদয়ন

Latest IPL News

PBKS হারলেও নায়ক আশুতোষ, কে এই প্লেয়ার? যাঁর ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ সূর্য, বুমরাহরাও স্নায়ুচাপের পরীক্ষা হয়েছে এই ম্যাচে, পঞ্জাব বধের পর বললেন হার্দিক পান্ডিয়া ছন্নছাড়া ক্যাপ্টেন্সি, দেরি হল ফিল্ড সাজাতে, বড় জরিমানার মুখে পড়লেন হার্দিক IPL 2024: ইডেনে এবার সবুজ জার্সি পরে নামছেন কোহলিরা,চাইছেন নিজেদের ভাগ্যও বদলাতে PBKS vs MI: IPL-এর ইতিহাসে এত বছরে যা হয়নি সেটাই হল এবার! ক্যামেরা দেখাল টসের স কাজে এল না আশুতোষ-শশাঙ্কের লড়াই, রোমাঞ্চকর ম্যাচে পঞ্জাবকে ৯ রানে হারাল মুম্বই বুমরাহের ইনসুইং ইয়র্কার বুঝতেই পারলেন না রসউ, উপড়ে গেল দু'টি স্টাম্প- ভিডিয়ো তখন আমি কিছুটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম- MI vs RR ম্যাচের স্মৃতি ভুলতে পারছেন না রোহিত আমরা চাই ধোনি শেষ বলে ছক্কা মারুক কিন্তু… লখনউয়ের রাস্তায় LSG-র প্রার্থনা ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য কী করেছেন? CSK-র সমালোচনা করতেই প্রাক্তনীর রোষে হর্ষ ভোগলে

Copyright © 2024 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.