নদী থেকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালি তোলা বা বেআইনি বালি খাদান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আপত্তি জানিয়ে আসছেন পরিবেশ কর্মীরা। সেই আপত্তির মধ্যেই রাজ্যের ২১টি নদী থেকে বালি তোলার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই সব নদীর ১৩০০ হেক্টর জমি থেকে বালি তোলা হবে। আর এই বিজ্ঞপ্তি নিয়েই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তাতে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। তাদের বক্তব্য, এর ফলে পরিবেশের ভারসাম্য ব্যাপকভাবে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই অবস্থায় বালি তোলা বন্ধের দাবিতে মুখ্য সচিবকে চিঠি দিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা।
আরও পড়ুন: আপনাদের সমস্যা কেন?বালি খাদান নিয়ে ইডির সমন আটকাতে গিয়ে সুপ্রিম তোপের মুখে সরকার
জানা গিয়েছে, মিনারেল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন সম্প্রতি এই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ময়ূরাক্ষী, কংসাবতী, অজয়, দামোদর, তারকেশ্বর, শিলাবতী, সুবর্ণরেখা, মহানন্দা প্রভৃতি নদীর এই এলাকা জুড়ে বালি তোলা যাবে। পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, অনেক সময় সরকারি বিজ্ঞপ্তির বাইরে গিয়েও অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালি তোলা হয়। তাই এই বালি তোলার আপত্তি জানিয়ে মুখ্য সচিবকে চিঠি দিয়েছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। পাশাপাশি তিনি সেচ দফতরের প্রধান সচিব এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনারেল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেন্ডিং কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানের কাছেও চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে তিনি নদীগুলি থেকে বালি তোলা বন্ধ করার আর্জি জানিয়েছেন।
তাঁর বক্তব্য, বালি তোলার ফলে সাময়িকভাবে আর্থিক উপার্জন হবে ঠিকই। কিন্তু, এর ফলে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হবে পরিবেশের। নদী থেকে বেশি বালি তোলার ফলে পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। সুভাষের আরও অভিযোগ, দীর্ঘদিন থেকে বালি তোলার ফলে এমনিতেই নদীগুলির অবস্থা বেহাল। সেগুলি নব্যতা এমনীতেই কমে গিয়েছে। তার ওপর আরও বালি তোলা হলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে। তাছাড়া বাস্তুতন্ত্রও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শুধু তাই নয়, কৃষিকাজেও সমস্যা হবে। এরফলে বন্যার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে বলে মত পরিবেশকর্মীদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, এভাবে বালি তোলার ফলে এলাকার ভূগোল পর্যন্ত বদলে দিতে পারে। আর তাছাড়া যে নদী গুলির কথা বলা হচ্ছে, সেগুলি একটা সময় ইতিহাস হয়ে যাবে। তাই এই অবস্থায় দ্রুত এই নদীগুলি থেকে বালি তোলার বিজ্ঞপ্তি বাতিল করা উচিত।