মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক তথা করোনাকালে গান গেয়ে ভাইরাল হওয়া গায়ক অনির্বাণ দত্তর মৃত্যুকে ঘিরে উঠেছিল একাধিক প্রশ্ন। ময়নাতদন্ত না করেই তড়িঘড়ি কেন দেহ সৎকার করা হয়েছিল? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন চিকিৎসকের প্রাক্তন স্ত্রী শর্মি চট্টোপাধ্যায়। এবার এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ জানালেন চিকিৎসকের প্রাক্তন স্ত্রী। জানা গিয়েছে, অনির্বাণের বর্তমান স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক সহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে তিনি থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। খুনের পাশাপাশি ষড়যন্ত্র, প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ তুলেছেন অনির্বানের প্রাক্তন স্ত্রী। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে বহরমপুর থানার পুলিশ। তবে অনির্বাণের বর্তমান স্ত্রী অর্চিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, অতিরিক্ত মদ খাওয়ার ফলেই মৃত্যু হয়েছে তার স্বামীর।
আরও পড়ুন: ময়নাতদন্ত না করেই তড়িঘড়ি সৎকার করা হল দেহ, চিকিৎসকের মৃত্যুতে উঠছে প্রশ্ন
বহরমপুরের ইন্দ্রপ্রস্থ এলাকায় স্ত্রী অর্চিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন অনির্বাণ দত্ত। সেখানেই গত ২৪ জুন আচমকা তার মৃত্যু হয়। খুনের অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই, এই ঘটনায় পুলিশ চিকিৎসকের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে অর্চিতা এবং শ্বশুর শান্তব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শাশুড়ি কাকলি বন্দোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এছাড়া, অনির্বাণকে যে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে অর্চিতা দাবি করেছেন, ২৪ জুন দুপুর ২টো নাগাদ বহরমপুরের একটি হোটেলে ঢুকেছিলেন অনির্বাণ। সেখানে তিনি ৪ বোতল মদ পান করেছিলেন। কিন্তু, দীর্ঘক্ষণ পরেও স্বামী বাড়ি না ফেরায় রাত ১০টা নাগাদ সেখানে গিয়ে অর্চিতা তাকে বাড়ি নিয়ে যান। এরপর ঘুমের ওষুধ খেয়ে রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ ঘুমিয়ে পড়েন অর্চিতা। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, সকালে উঠে তিনি দেখতে পান অনির্বাণ ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছেন। তখন তাকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে হোমিও চিকিৎসক বিভাস কুণ্ডুর কাছ থেকে ডেথ সার্টিফিকেট নেওয়া হয়। এরপর খাগড়া শ্মশানে অনির্বাণের দেহ সৎকার করা হয়।
তবে শর্মি অভিযোগ করেন, তিনি অন্য মারফত স্বামীর মৃত্যুর খবর জানতে পেরেছিলেন। তারপরেই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু, যখন তিনি সেখানে পৌঁছোন তখন সৎকার সম্পন্ন হয়ে যায়। তার ছেলে বাবাকে শেষ দেখা করারও সুযোগ পায়নি। এরপরই অনির্বাণের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন শর্মি। সেই ঘটনায় আগেই বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছিল চিকিৎসক সংগঠনগুলি। আর এবার এফআইআর পেয়ে তদন্ত শুরু করল পুলিশ।