পঞ্চায়েতের কার্যালয়েই সারা হল শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠান! ঘটনা ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর-১ ব্লকের বাঁধিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসে। বিতর্কে জড়িয়েছেন ওই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করা পঞ্চায়েতের কর্মী এবং স্থানীয় বিডিও।
ঘটনা ঠিক কী?
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, বাঁধিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে রয়েছেন চিন্ময় শিট। কিছু দিন আগেই তাঁর কাকার মৃত্যু হয়। চিন্ময়ের দাবি, কাকার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করার জন্য নিয়ম মেনেই স্থানীয় বিডিওর কাছে ছুটির আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, বিডিও তাঁর সেই ছুটির আবেদন মঞ্জুর করেননি। তাই, একপ্রকার বাধ্য হয়েই পঞ্চায়েত কার্যালয়ে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সারার বন্দোবস্ত করেন চিন্ময়।
তাঁর আরও দাবি, তিনি যাতে সুষ্ঠুভাবে শ্রাদ্ধের কাজ সারতে পারেন, তার জন্য পঞ্চায়েত অফিসের সহকর্মীরাও তাঁকে সাহায্য করেছেন। পুরোহিত ডেকে, যাবতীয় রীতিনীতি মেনেই সবটা করা হয়েছে।
কিন্তু, চিন্ময়ের এই দাবি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। পালটা তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে।
এই বিষয়ে স্থানীয় বিডিও পূজা দেবনাথকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমে যা লেখা হয়েছে, তার সারমর্ম হল, ছুটির আবেদন করা এবং তা মঞ্জুর না হওয়া নিয়ে আদতে মিথ্যা দাবি করছেন চিন্ময়।
বিডিও জানান, সরকারি নিয়ম অনুসারে অবশ্যই চিন্ময়ের ছুটি পাওয়ার কথা। কিন্তু, তার জন্য তাঁকে তো লিখিত আবেদন করতে হবে। কিন্তু, তিনি তেমন কোনও আবেদন নাকি বিডিওকে করেননি!
বিডিও জানান, ওই একই দিনে রামনগর-১ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েতের আরও পাঁচজনের ছুটির আবেদন মঞ্জুর করেছেন তিনি। তাহলে খামোখা চিন্ময়ের ছুটির আবেদন কেন নামঞ্জুর করবেন? বিশেষ করে তিনি যখন তাঁর কাকার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করার মতো একটি গুরুতর কারণে ছুটি চেয়েছেন!
অভিযোগের প্রায় একই সুর শোনা গিয়েছে রামনগর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিতাই সারের গলাতেও। তাঁকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমে লেখা হয়েছে - যেকোনও সরকারি অফিসে ছুটি পাওয়ার নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। সেই নিয়ম মেনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করতে হয়।
চিন্ময়ের উদ্দেশে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে নিতাই বলেন, তিনি যে লিখিতভাবে বিডিওর কাছে ছুটির আবেদন করেছিলেন, তা প্রমাণ করতে পারবেন? নিতাই রীতিমতো জোর গলায় বলেন, চিন্ময় তা পারবেন না। কারণ, তিনি তেমন কোনও আবেদনই করেননি।
উলটে চিন্ময়ের বিরুদ্ধে নিতাই অভিযোগ করে জানিয়েছেন, একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে ওই ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে সরকারের বদনাম করার অপচেষ্টা করছেন।