দেশের অন্দরে দার্জিলিং চায়ের বাজারে থাবা বসিয়েছে নেপালের চা। তবে এবার আর শুধু দেশের অন্দরের বাজারেই নয়, দার্জিলিং চায়ের রফতানির ক্ষেত্রেও কি থাবা বসাচ্ছে নেপালের চা? কারণ চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে দেখা যাচ্ছে ভারত থেকে চায়ের রফতানি বেড়েছে। কিন্তু দার্জিলিং চায়ের রফতানি বাড়েনি। এখানেই প্রশ্ন তবে কি দার্জিলিং চায়ের রফতানির ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে নেপালের সস্তা চা?
প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ শান্তা ছেত্রী ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন যাতে ভারতে নেপালের চায়ের প্রবেশকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কারণ নেপালের চা যেভাবে ভারতের বাজারে আসছে তাতে দার্জিলিংয়ের টি এর বাজারে বিরাট খারাপ প্রভাব পড়ছে। সেক্ষেত্রে দার্জিলিং চায়ের চাহিদা কমে গেলে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে চা বাগানের উপর। বন্ধ হয়ে যেতে পারে একাধিক চা বাগান।
মূল সমস্যাটি হচ্ছে দার্জিলিং চা বলে নেপালের টি বিক্রি করা হচ্ছে বাজারে। এদিকে সাধারণ মানুষের পক্ষে আলাদা করে কোনটা দার্জিলিং টি আর কোনটা নেপালের টি সেটা বোঝা সম্ভব। সেকারণেই এই দুটি চায়ের মধ্যে একটা বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। সেক্ষেত্রে যদি নেপালের চায়ের অনুপ্রবেশ বন্ধ না করা হয় তাহলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। তবে এবার সমস্যাটা অন্য জায়গায়।আশঙ্কাটা অন্য জায়গায়। দার্জিলিং চায়ের রফতানি বাড়ছে না।
সূত্রের খবর, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ভারত থেকে সব মিলিয়ে ১৯০.০৮ মিলিয়ন কেজি চা রফতানি করা হয়েছে। গত বছর এই সময়ের মধ্যে যে চা রফতানি হয়েছিল তার তুলনায় এই পরিমাণটা বেশি। গতবছর এই সময়ের মধ্য়ে ১৬১.২৬ মিলিয়ন কেজি চা রফতানি করা হয়েছিল।
এদিকে সামগ্রিকভাবে চায়ের রফতানি বাড়লেও দার্জিলিং টি এর রফতানি বেড়েছে এমনটা বলা যাচ্ছে না। তবে কেবলমাত্র নেপালের টি এর জন্য দার্জিলিং চায়ের রফতানির বাজার চাঙা হচ্ছে না সেটা নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, দার্জিলিং চা কে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মানুষ এখনও একডাকে চেনেন। দার্জিলিং টি জিআই ট্যাগ পেয়েছে। কিন্তু এই চায়ের প্রমোশন বিশ্বের বাজারে হওয়া দরকার। সেই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে অন্যরা। তাছাড়া দার্জিলিং চায়ের সঙ্গে যদি নেপালের চা ব্লেন্ড করে সেটাকে দার্জিলিং টি বলে চালানো হয় তাহলে সেই চায়ের কদর দিনের পর দিন কমবে।