ক্ষমতায় আসার পরেই স্বাস্থ্যক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া রোগীদের সহায়তায় ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান বা ফেয়ার প্রাইস শপ চালু করেছে। সেই পরিকল্পনা ব্যাপকভাবে সফল হয়েছে। এছাড়াও চিকিৎসার সুবিধার্থে স্বাস্থ্যসাথী, বিনামূল্যে চিকিৎসা সহ একাধিক প্রকল্প নিয়ে এসেছে বর্তমান রাজ্য সরকার। সাধারণত বর্তমানে বড়-বড় হাসপাতালগুলিতে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান রয়েছে। আর এবার রোগীদের সুবিধার্থে আরও একধাপ এগিয়ে ব্লক এবং গ্রামীণ হাসপাতালেও এই পরিষেবা চালু করতে চাইছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের বিরুদ্ধে বেনিয়মের অভিযোগ, কড়া নির্দেশ রাজ্যের
নবান্ন সূত্রের খবর, গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান গড়ে তোলা হবে। রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলায় ৩৪৭টি ব্লক এবং গ্রামীণ হাসপাতালে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান গড়ে তোলার। এর ফলে গোটা রাজ্যে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানের সংখ্যা বেড়ে হবে ৪৬০টি। ১৪০ টিরও বেশি ওষুধ ন্যায্য মূল্যের দোকানগুলি থেকে কিনতে পারবেন রোগীরা। এমন অনেক দরিদ্র রোগী রয়েছেন, যাঁদের মাসে কয়েক হাজার টাকার ওষুধ লাগে। এই ওষুধগুলির মধ্যে যেমন রয়েছে সুগার, প্রেসার, হার্ট, নার্ভের ওষুধ, তেমনই রয়েছে কিডনি, নিউরো, চোখের ওষুধ বা জরুরি ইঞ্জেকশন। সাধারণ দোকানে এই ওষুধগুলি কিনতে গিয়ে দরিদ্র রোগীদের ব্যাপক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়।
অনেক রোগী আবার অর্থাভাবে পুরো ওষুধ কিনতে পারেন না। এই পরিস্থিতিতে ব্লক এবং গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান গড়ে উঠলে সেক্ষেত্রে রোগীদের বড় সুবিধা হবে। কারণ এই দোকানগুলি থেকে ৫০ শতাংশ ছাড়ে ওষুধ কিনতে পারবেন রোগীরা। অর্থাৎ মাসে ওষুধ কেনার জন্য যে অর্থ খরচ হয়, ন্যায্য মূল্যের দোকানের ফলে সেই খরচ কমে অর্ধেক হবে। কিছু কিছু ওষুধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৮৬ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হবে এই ন্যায্য মূল্যের দোকানগুলিতে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে রাজ্যে সবমিলিয়ে ১১৭ টি ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান রয়েছে। তবে সেগুলি বেশিরভাগই রয়েছে মেডিক্যাল কলেজ, জেলা হাসপাতাল আর কিছু ক্ষেত্রে মহকুমা হাসপাতাল বা স্টেট জেনারেল হাসপাতাল অথবা কয়েকটি গ্রামীণ হাসপাতালে। তবে ব্লক স্তরে এই হাসপাতালগুলি হলে স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যের কোটি কোটি রোগীরা উপকৃত হবেন। তবে ওষুধের গুণমানের সঙ্গে কোনও আপোষ করা হবে না। না রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানিয়েছেন, রাজ্যের সব ব্লক হাসপাতালে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান হবে। শীঘ্রই এ নিয়ে টেন্ডার ডাকা হবে।