রক্ত বন্ধ করতে কানের ভেতর আঠা ঢাললেন হাতুড়ে, কাটোয়ার ঘটনায় গায়ে কাঁটা দেবে

অল্পের জন্য় প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন ওই গাড়ি চালক। মারাত্মক যন্ত্রণা থেকে কিছুটা মুক্তি পেয়েছেন তিনি। তবে শ্রবণশক্তি তিনি অনেকটাই হারিয়েছেন।

হাতুড়ের কাছে কান পরিষ্কারের জন্য গিয়েছিলেন কাটোয়ার এক যুবক। কাটোয়া থানার কোয়ারা গ্রামের বাসিন্দা শ্যামল প্রামাণিক। পেশায় তিনি গাড়ি চালক। এদিকে পরিষ্কার করতে গিয়ে কান দিয়ে গলগল করে বেরিয়ে যায় ওই গাড়ি চালকের। তারপরই কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়েন ওই ব্য়ক্তি।বিপাকে পড়েন হাতুড়েও। তবে রক্ত বন্ধ করার জন্য বিশেষ পরামর্শ দেন হাতুড়ে। সেটা আবার করেও দেখান। তিনি কানের ভেতর এমসিল আঠা ঢেলে দেন। ঠিক কী বলেছিলেন হাতুড়ে?

শ্যামলের স্ত্রী সঞ্চিতার দাবি, হাতুড়ে বলেছিল কানে আঠা ঢুকিয়ে দিতে। এতে রক্ত বন্ধ হয়ে যাবে। এরপর আপনা থেকে সেই আঠাও বেরিয়ে আসবে। কিন্তু সেসব আর হয়নি।

বাড়ি ফিরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। যন্ত্রণায় মাথা ছিঁড়ে যাওয়ার মতো পরিস্থতি তৈরি হয়। রাতটা কোনওরকমে বাড়িতে কাটান। এরপর ভোর হতেই তাকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে সেখানে পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা দেখেন কানের ভেতর আঠা একেবারে শক্ত করে বসে গিয়েছে। এরপর চিকিৎসকরা কোনওরকমে সেই আঠা বের করে আনেন। 

তবে এই আঠা যে সে আঠা নয়। কলের পাইপ জুড়তে এই ধরনের কড়া আঠা ব্যবহার করতে হয়। আর সেই আঠাই গাড়ি চালকের কানে ঢেলে  দিয়েছেন হাতুড়ে। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কানের পর্দা নষ্ট হয়ে গিয়েছে ওই গাড়ি চালকের। 

এদিকে ওই হাতুড়ের খোঁজ চলছে ইতিমধ্য়েই। তবে এভাবে কানের ক্ষত মেরামত করতে গিয়ে এমসিল ঢালার ঘটনাকে ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তবে কি কানকে তিনি জলের পাইপ লাইন ভেবেছিলেন? তার জেরে কানের ভেতর একেবারে এমসিল ঢেলে দিয়েছিলেন। 

তবে অল্পের জন্য় প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন ওই গাড়ি চালক। মারাত্মক যন্ত্রণা থেকে কিছুটা মুক্তি পেয়েছেন তিনি। তবে শ্রবণশক্তি তিনি অনেকটাই হারিয়েছেন। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সরকারি চিকিৎসকরা তাঁকে সুস্থ করার সমস্ত রকম চেষ্টা চালাচ্ছেন। পরবর্তী সময় তাঁর কানের পর্দার মেরামতির কাজও করা হবে। 

তবে স্বামী প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন এটার জন্য সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছেন স্ত্রী সঞ্চিতা। স্বামীকে নিয়ে এখনও ব্যস্ত রয়েছেন তিনি। একটু সুস্থ হলেই তিনি হাতুড়ের খোঁজ করবেন। তবে এই ধরনের  ঘটনা যে বাস্তবে হতে পেরে তা জেনে শিউরে উঠছেন অনেকেই। অভিযুক্ত হাতুড়ের কড়া শাস্তি চান স্থানীয় বাসিন্দারা।