রাস্তার ধারে নীল বাতি লাগানো স্করপিওতে বসে দুই সঙ্গীকে নিয়ে মদ্যপান করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ল ভুয়ো ডিএসপি! বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে চন্দননগরের রানীঘাট এলাকায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী। অপর দুই ধৃতের নাম অমর পাল ও সুকুমার চৌধুরী।
ধৃত ওই ভুয়ো ডিএসপি চন্দননগরের বক্সি গলি এলাকার বাসিন্দা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, এলাকায় নিজেকে ডিএসপি পরিচয় দিয়েই ঘুরে বেড়াত অভিযুক্ত। স্করপিও গাড়িটি কোনও সরকারি আধিকারিকের। এমনকী, যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করত নীল বাতি লাগানো ওই স্করপিও গাড়িটিতেই। তবে ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১২০ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ধৃতদের চন্দননগর আদালতে তোলা হলে ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় পুলিশের স্টিকার লাগানো ধবধবে সাদা রঙের স্করপিওর মধ্যে বসেই মদ্যপান করছিলেন ভুয়ো ডিএসপি অফিসার। এমনকী, পুলিশকর্মীরা তাকে গাড়ি থেকে নামতে বললে, পুলিশের পোশাক পরা ওই ব্যক্তি নিজেকে ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিক বলে পরিচয়ও দেন। পুলিশকর্মীরা চন্দননগর থানার আইসিকে খবর দিলে, ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন তিনি। ডিএসপিকে তার চাকরি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই, সমস্ত জারিজুরি ফাঁস হয়ে যায়। অভিযুক্ত এই ব্যাক্তি স্বীকার করে নেন, আদতে তিনি কোনও ডিএসপি নন। এরপর চন্দননগর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ভুয়ো ডিএসপিকে। তার দুই সঙ্গীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে চন্দননগরের রানীঘাট এলাকায়। স্করপিও গাড়িটি কোনও সরকারি আধিকারিকের। এমনকী, যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করত ওই নীল বাতি লাগানো স্করপিও গাড়িটি।
ধৃতদের চন্দননগর আদালতে তোলা হলে ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় রাত ১১টা নাগাদ চন্দন নগর থানার অদূরেই সাদা রঙের স্করপিও গাড়ি দাঁড় করিয়ে তার মধ্যে বসে মদ্যপান করছিলেন তিন ব্যক্তি।
নীল বাতি লাগানো দুধ সাদা রঙের স্করপিওকে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হয়েছিল চন্দননগর থানার টহলরত পুলিশকর্মীদের। সন্দেহ হাওয়ায়, গাড়িটির কাছে গিয়ে কাচ নামাতে বলেন পুলিশকর্মীরা। দেখা যায়, গাড়ির মধ্যে কাঁচ তুলে মদ্যপান করছেন তিন ব্যক্তি। তাদের গাড়ি থেকে নামতেই নিজেকে হাওড়া গ্রামীণ ডিএসপি বলে পরিচয় দেন। অবশ্য অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত আর্থিক প্রতারণার কোনও অভিযোগ ওঠেনি।
পুলিশি জেরায় অভিযুক্ত জানিয়েছে, আগে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ ছিল সে। তারপর বিভিন্ন সরকারি আধিকারিকদের গাড়ি চালাত। সেই সূত্রেই বিভিন্ন সরকারি আধিকারিকদের গাড়ি চালকের সঙ্গে পরিচিতি গড়ে ওঠে সিদ্ধার্থের। এরপরই পুলিশের পোশাক পরে ভুয়ো ডিএসপি পরিচয়ে ঘুরে বেড়াত অভিযুক্ত।
চন্দননগর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, সিদ্ধার্থ একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ২০১৩ সালে ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে চন্দননগর কলেজ থেকে পাশ করেন। তার স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা।কীভাবে ওই অভিযুক্ত পুলিশের উর্দি জোগাড় করলেন, এ ঘটনার সঙ্গে আর কে কে জড়িত রয়েছে, সে বিষয়ে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।