এক মেধাবী ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল বর্ধমান থানা এলাকায়। মৃতার নাম শুভেচ্ছা ঘোষ। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। সবথেকে বড় কথা, তাঁর পরিবারের সদস্যদের দাবি, পরীক্ষায় প্রথম না হয়ে দ্বিতীয় হওয়ার জন্যই নাকি নিজেকে শেষ করে দিয়েছেন ওই তরুণী!
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, ২৩ বছরের শুভেচ্ছা ঘোষ আদতে ছিলেন বীরভূমের সাঁইথিয়ার বাসিন্দা। কিন্তু, পড়াশোনা করতেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁর বিষয় ছিল, ইংরেজি।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, শুধুমাত্র উচ্চশিক্ষা লাভের জন্যই বাড়ি ছেড়ে বর্ধমানে থাকছিলেন তিনি। সেখানকার মেঘনাথ সাহা পল্লি এলাকার একটি মেসবাড়িতে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন ওই তরুণী।
শুভেচ্ছার বাবা অশোক ঘোষকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিদিনই রাতে দিদির সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন শুভেচ্ছা। বৃহস্পতিবার রাতেও তার কোনও ব্যতিক্রম হয়নি।
কিন্তু, শুক্রবার সকাল থেকে শুভেচ্ছার সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ করতে পারেননি তাঁর পরিবারের সদস্যরা। বহুবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি বলে দাবি করা হচ্ছে। এর ফলে শুভেচ্ছার পরিবারের সদস্যরা তাঁর মেসের মালিককে ফোন করেন। এরপর মেসের লোকজন ওই তরুণীর খোঁজ করেন। এরপরই মেসের ঘরে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখা যায়।
এই ঘটনার খবর পেয়ে ওই মেসে পৌঁছয় বর্ধমান থানার পুলিশ। শুভেচ্ছার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় তারা। সেইসঙ্গে, একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়।
শুভেচ্ছার পরিবারের সদস্য়দের দাবি, স্নাতকোত্তরের পরীক্ষার দ্বিতীয় সেমিস্টারে দ্বিতীয় হয়েছিলেন তিনি। আর সেই কারণেই ওই তরুণী নাকি বেশ কিছু দিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। পরিবারের ধারণা, এই অবসাদ থেকেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি!
কিন্তু, প্রশ্ন হল - শুভেচ্ছার বাবা-ই বলছেন, বৃহস্পতিবার রাতে ওই তরুণী তাঁর দিদির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন। তাহলে তখন কি শুভেচ্ছার দিদি একটুও আভাস পাননি যে তাঁর বোন এতটা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন যার জন্য তিনি নিজেকে শেষ পর্যন্ত করে দিতে পারেন?
অন্যদিকে, এখনও পর্যন্ত যতটুকু খবর সামনে এসেছে, সেই অনুসারে - শুভেচ্ছার মেসবাড়ির মালিক স্বপন দাস জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার অনেক রাত পর্যন্ত জেগে ছিলেন শুভেচ্ছা।
এক্ষেত্রেও প্রশ্ন ওঠে, শুভেচ্ছা যে এতটা অবসাদে ভুগছিলেন, সেটা কি তাঁর সহপাঠী, অধ্যাপক, মেসবাড়ির লোকজন - কেউই বুঝতে পারেননি? কোনও অস্বাভাবিকতা চোখে পড়েনি তাঁদের? স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে দানা বেঁধেছে রহস্য। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সমস্ত সম্ভাবনা।