বরানগরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর লোকোমোটর ডিজঅ্যাবিলিটিজের ছাত্র প্রিয়রঞ্জন সিংয়ের রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় উঠে আসছে র্যাগিংয়ের অভিযোগ। সোমবার রাতে বিশেষভাবে সক্ষমদের ওই হাসপাতালের হস্টেল থেকে উদ্ধার হয়েছিল প্রিয়রঞ্জনের ঝুলন্ত দেহ। এই ঘটনায় র্যাগিংয়ের অভিযোগ তুলে থানার দ্বারস্থ হল পরিবার। এক ছাত্রী সহ মোট ৯ জন সিনিয়রের বিরুদ্ধে থানায় র্যাগিংয়ের অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃত ছাত্রের পরিবার।
দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র প্রিয়রঞ্জনকে সোমবার রাতে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাঁর বন্ধুরা তাঁকে কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় প্রিয়রঞ্জনের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ করেন অন্যান্য ছাত্ররা। প্রিয়রঞ্জনের ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়েছে। বিহারের গয়ার বাসিন্দা ওই ছাত্রের পরিবারের দাবি, তাঁকে গত কয়েক মাস ধরে র্যাগিং করা হচ্ছিল। র্যাগিংয়ের অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের ডিরেক্টর পি পি মোহান্তি বলেন, প্রিয়রঞ্জনের উপর র্যাগিংয়ের অভিযোগের পাওয়ার পরেই অ্যান্টি-র্যাগিং সেল জুলাই মাসে একটি তদন্ত করেছিল। সেখানে দোষী সাব্যস্ত পাঁচজন সিনিয়র ছাত্রকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে সোমবার রাতে আন্দোলন শুরু করেন পড়ুয়ারা। আন্দোলনকারীরা হাসপাতালের মূল দরজায় তালা লাগিয়ে দেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, চিকিৎসক, কর্মচারী, রোগী এমনকি পুলিশকেও ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। মঙ্গলবারও বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রিয়রঞ্জন ২০২১ সালে বরানগরের ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে, যেহেতু তাঁকে কিছু সিনিয়র ছাত্র র্যাগিং করেছিল তাই তাঁরা অ্যান্টি-র্যাগিং সেলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। প্রিয়রঞ্জনের ভাইয়ের অভিযোগ, হস্টেলের কয়েকজন সিনিয়র ছাত্র তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেছিল। আমরা অ্যান্টি র্যাগিং সেলে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কিন্তু অভিযুক্তরা আমার ভাইকে হুমকি দেয় এবং তাঁকে র্যাগিং করতে থাকে। মাত্র কয়েকদিন আগে দাদা বলেছিলেন যে তিনি মেডিক্যাল কলেজ ছেড়ে যেতে চান।’ এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে বলে বারাকপুরের পুলিশ জানিয়েছে।