ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দেওয়ায় বানভাসী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তার জেরে নদীগুলির জলস্তর বাড়তে শুরু করেছে। যদিও এখনও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। জলস্তর বেড়ে যাওয়ার দরুণ ফরাক্কা বাঁধ প্রকল্পের ১০৯টি স্লুইস গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। বিহার–ঝাড়খণ্ডে নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ। এই কারণে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ–সহ নানা জায়গায়। ত্রিপল ও শুকনো খাবার মজুত করল ব্লক প্রশাসন। পঞ্চায়েতগুলিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা রয়েছে।
এদিকে ফরাক্কা নিয়ে কর্তৃপক্ষ কালক্ষেপ না করেই জানিয়ে দিয়েছে, ওই ব্যারেজের গেট খোলার বিষয়টি রুটিন। প্রত্যেক বর্ষায় এই গেট খুলে দিতে হয় অতিরিক্ত জল থাকায়। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে দেখানো হয়, ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশে বন্যা হয়ে গিয়েছে। বন্যার পুরনো ভিডিয়ো সামনে নিয়ে এসে প্রচার করা হয়, ফরাক্কার জলে বাংলাদেশের হাজার হাজার গ্রাম জলের তলায়। এমনকী ভারতকে ‘পানি দস্যু’ বলে আক্রমণ করতেও ছাড়েনি প্রতিবেশি দেশ। বলা হয়, এই জল ছাড়ার জেরে প্লাবিত হতে পারে বাংলাদেশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ–সহ নানা জেলা।
আরও পড়ুন: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি, সিবিআই অধিকর্তাকে চিঠি সাংসদ অভিজিতের
অন্যদিকে রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত সাড়ে ১১ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে বলে জানান ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজার আর দেশপান্ডে। তিনি বলেন, ‘এই ফরাক্কা ব্যারাজে জলধারণের মাত্রা ডেঞ্জার লেভেল (৭৭.৩৪ মিটার) অতিক্রম করেছে। যে দ্রুততার সঙ্গে জল বাড়ছে তাতে গেট খুলে না দিলে সেতুর ক্ষতি হতে পারত। আর সেতুর উপরে চাপ পড়ত। তাই ১০৯টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।’ সূত্রের খবর, ঢাকায় কর্মরত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় বর্মাকে ডেকে কথা বলেছেন সে দেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। তবে সেখানে ফরাক্কার জল ছাড়া নিয়ে বাংলাদেশ প্লাবিত হয়েছে এমন অভিযোগ করেননি তিনি।
এছাড়া যে পরিমাণে বৃষ্টি চলছে তাতে পাহাড়ের জল এখনও নামেনি। এই সমস্যা মোকাবিলায় ফিডার ক্যানালের জল কম রাখা হয়েছে। নয়াদিল্লির বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, বর্ষার সময় এটাই স্বাভাবিক বিষয়। প্রোটোকল অনুযায়ী এই ব্যাপারে তথ্য বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট যৌথ নদী কমিশনের কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে থাকা গভীর নিম্নচাপ এবার এসে মিশেছে একটি মৌসুমি অক্ষরেখার সঙ্গে। ওই অক্ষরেখাটি পশ্চিম রাজস্থান থেকে মধ্যপ্রদেশ এবং ঝাড়খণ্ডের ডালটনগঞ্জ হয়ে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত গিয়েছে।