ধান কেনা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে রাজ্যের কৃষকদের। কারণ কোথাও ধান কেনার শিবির ‘অপর্যাপ্ত’, কোথাও উৎপাদিত ধানের তুলনায় কম ধান কেনা হচ্ছে, ধান কেনার কেন্দ্রের দূরত্ব বেশি, কোনও কেন্দ্রে ‘বাটা’ বা ‘খাদ’ বেশি ধরা হচ্ছে। এই নিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কটাক্ষ, ‘সহায়ক মূল্যে ধান কেনা নিয়ে কী হচ্ছে, সবাই দেখছেন।’ জবাব দিয়েছেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও। তিনি বলেন, ‘রাজ্যপাল ঠিক বলছেন না। কোনও সমস্যা নেই।’
খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, এই বছরে ৫২ লক্ষ কুইন্টাল ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ৪৬ লক্ষ কুইন্টাল রাজ্য, ছ’লক্ষ কুইন্টাল কিনবে ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (এফসিআই)। প্রতি কুইন্টাল ১,৮৬৮ টাকা দরে ধান কেনা হচ্ছে। চাষিদের অভিযোগ, সরকার সহায়ক মূল্যে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টন ধান কিনবে। অথচ জেলায় মোট উৎপাদিত ধানের ১৫.২ শতাংশ। বাকি ধান চাষিদের খোলা বাজারে বেচতে হবে, যেখানে কুইন্টাল প্রতি দর ১,০০০–১,১০০ টাকা।
এদিকে মুর্শিদাবাদে স্থানীয়ভাবে শিবির কম হওয়ায় সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে চাষিদের ৩০–৫০ কিলোমিটার পাড়ি দিতে হচ্ছে বলে দাবি। ট্রাক বা ট্র্যাক্টর ভাড়া করে সেখানে পৌঁছতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন চাষিরা। সরকারি শিবিরে গিয়ে ধান বিক্রি করলে কুইন্টাল পিছু যে অতিরিক্ত ২০ টাকা উৎসাহ ভাতা দেওয়া হয়, তাতে পড়তায় পোষাচ্ছে না বলে খবর।
অন্যদিকে পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, মালদহ, বীরভূম, পূর্ব মেদিনীপুরে ধান ক্রয় কেন্দ্রে প্রতি কুইন্টালে তিন থেকে ১০ কেজি ‘বাটা’ বা ‘খাদ’ বাদ দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে তা নিয়ে দু’বার বিক্ষোভও হয়েছে।ধান কেনা নিয়ে রয়েছে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা–১ এবং পিংলায়।
খাদ্যমন্ত্রীর জেলা উত্তর ২৪ পরগনায় গত ২ নভেম্বর থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হয়েছে। চাষিদের দাবি, শিবিরের সংখ্যা বাড়ানো হোক। কারণ, শিবিরে গেলেই ধান নেওয়া হচ্ছে না। চাষিদের নাম লিখে রাখা হচ্ছে। পরে ফোন করে তাঁদের ডাকা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হলেও, ডাক আসছে না বলে অভিযোগ।