বাংলার শস্যভাণ্ডার বলা হয় বর্ধমান জেলাকে। আর এখন সেখানেই হাহাকার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কারণ আগে জমির ধান কিনে নিত চালকলগুলি। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলত। এই বছর ব্যতিক্রম হওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে গলসির বিস্তীর্ণ এলাকায়। সেই ক্ষোভ আছড়ে পড়েছে চালকলের সামনে। চালকলের সামনে অবস্থান–বিক্ষোভ শুরু করেছেন তাঁরা। ‘বর্ধমান ডিস্ট্রিক্ট রাইসমিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়েছে, চাষিদের অন্যায় আবদারে ১৫টি চালকল বন্ধ হয়েছে। এমন চলতে থাকলে গলসি ১ ও ২ ব্লকে ৫০টি চালকল বন্ধ করে দেওয়া হবে। সহায়কমূল্যে ধান কেনার প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে বলেও দাবি করেছেন তাঁরা। খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, ‘বিষয়টির খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’
স্থানীয় সূত্রে খবর, চারশোর বেশি চালকল রয়েছে পূর্ব বর্ধমানে। গলসির একটা অংশের কিছু চাষি প্রত্যেক বছর সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করা নিয়ে অশান্তি করেন। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে আটকে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। তার জেরে মন্ত্রীদের গাড়িও আটকে পড়েছিল আগে। চাষিদের দাবি ছিল, সহায়ক মূল্যে ধান চালকলগুলিকে কিনতে হবে। আর চালকল মালিকদের বক্তব্য, ধান কেনার ক্ষমতা তাদের নেই। খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, গলসিতে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ হাজার টন। সেখানে সহায়ক মূল্যে (কুইন্টাল প্রতি ১৮৬৮ টাকায়) ৩৭ হাজার টন ধান কেনা হয়েছে।
পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠায় চালকল মালিকেরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী এবং কৃষি উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়েছেন। ১২ জুন চাষিরা মিছিল করে ১৩টি চালকল বন্ধ করে দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওই চিঠিতে। জেলা খাদ্য নিয়ামক আবির বালি বলেন, ‘আমরা গলসিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান কিনেছি। এখন গলসির সমস্যাটি একান্তই চাষি ও চালকলের মধ্যে রয়েছে।’