শীতকালীন ফসলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আলু। রাজ্যের বহু কৃষক শীতকালে আলু চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু, জাওয়াদের প্রভাবে টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন রাজ্যের বহু জেলার আলু চাষিরা। পশ্চিম মেদিনীপুরের বহু কৃষক ব্যাঙ্ক এবং সমবায় সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করেছিলেন। কিন্তু ডিসেম্বরের শুরুতে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে আলু গাছ কার্যত জলের তলায়। এই অবস্থায় চরম ক্ষতির আশঙ্কা করছেন রাজ্যের আলুচাষিরা। রাতের ঘুম উড়েছে চাষিদের। এখন তারা জীবিকা নির্বাহ কীভাবে করবেন, তা নিয়ে চিন্তায় মাথায় হাত আলুচাষিদের।
বিশেষ করে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল, চন্দ্রকোনা ১ ও ২ নম্বর ব্লক, দাসপুর প্রভৃতি এলাকায় ইয়াসের সময় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেই সময় ধানচাষিরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। সেই বিপদ কাটিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আলু চাষ করার কথা ভেবেছিলেন কৃষকরা। তাঁদের ধারণা ছিল, আলু চাষ করলে হয়তো দুর্বিষহ অবস্থা কিছুটা কাটানো সম্ভব হবে। সেই আশাতেই ব্যাঙ্ক এবং সমবায় সমিতি থেকে ২০-২৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে আলু চাষ করেছিলেন বহু কৃষক।
তবে টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়েছে মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার চাষের জমি। সাধারণত আলু চাষে জল কম লাগে। কিন্তু জাওয়াদের ফলে জল থৈ থৈ অবস্থা জমিতে। জমি থেকে জল কীভাবে বের করবেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না চাষিরা। চাষিদের কথায় জমি থেকে জল বের করা না গেলে সেক্ষেত্রে আলু গাছ পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আলুর পাশাপাশি শীতকালীন সবজিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা চাষিদের। তাঁদের কথায়, 'জাওয়াদ সব শেষ করে দিয়ে গেল।'
চাষিদের আশঙ্কা, শনিবার থেকে যে বৃষ্টি চলছে তাতে জমিতে জল থইথই অবস্থা। এর ফলে আলু গাছ বাঁচার সম্ভাবনা খুব কম। তাঁদের বক্তব্য, 'এই করেই তাদের সংসার চলে । তার উপর যদি এই বছর আলু না হয়, সেক্ষেত্রে না খেতে পেয়ে মরতে হবে। তাই এই পরিস্থিতিতে কোনও উপায় না থাকায় সরকারি সাহায্যের উপরেই ভরসা রাখছেন চাষিরা।' তাঁদের বক্তব্য,' সরকার সাহায্য না করলে আমাদের কোন উপায় থাকবেনা। '
যদিও এ বিষয়ে মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস কৃষকদের নিয়ে চিন্তিত। তিনি জানান, গোটা পরিস্থিতির ওপর নজরদারি রাখা হচ্ছে। কৃষকদের কথা নিশ্চয়ই ভাবা হবে।