নিজের সদ্যজাত সন্তানকে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিল বাবা। কিন্তু স্বাস্থ্য কর্মীদের সক্রিয়তায় সেই শিশু বিক্রির ছক ভেস্তে গেল। গাইঘাটার চাঁদপাড়া এলাকার এই ঘটনায় তীব্র আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযোগ, জমি–বাড়ির লোভে সদ্যোজাত শিশুপুত্রকে বিক্রির ছক কষেছিল বাবা। তাই সন্তান জন্ম দেওয়ার পর তড়িঘড়ি হাসপাতাল থেকে ওই গৃহবধূকে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে তার স্বামী। এই কাজ করার জন্যই হাসপাতালে অনেক ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছিল। ওই শিশুপুত্রের বাবা সঞ্জয় দাসকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
ঠিক কী ঘটেছে গাইঘাটায়? স্থানীয় সূত্রে খবর, গাইঘাটার চাঁদপাড়ার বাসিন্দা সঞ্জয় দাস। পেশায় দিনমজুর। সে বিজলী দাসকে বিয়ে করে। বিয়ের পরপরই বিজলীদেবী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এই পরিস্থিতিতে ১৫ ডিসেম্বর রাতে বিজলীদেবীকে চাঁদপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর রাতেই তিনি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সন্তান প্রসবের পরই স্বামী সঞ্জয় বিজলীদেবীকে নিয়ে দ্রুত হাসপাতাল ছাড়ার কথা জানিয়ে দেয়। এমনকী বাচ্চার কাগজপত্রের জন্য নিজেদের কোন তথ্য সঞ্জয় হাসপাতালে জমা দিতে চাইছিল না। এই ঘটনায় স্বাস্থ্য কর্মীদের সন্দেহ হতেই তাঁরা বিষয়টি হাসপাতালের সুপারকে জানান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সঞ্জয়ের সঙ্গে কথা বলতেই একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়ে। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গাইঘাটা থানায় বিষয়টি জানায়।
পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে? পুলিশ সূত্রে খবর, বিজলীদেবী অন্তঃসত্ত্বা হওয়া নিয়েই প্রথমে ঝামেলা শুরু হয়। আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় বাচ্চাকে লালন–পালন করা নিয়ে তাঁদের মধ্যে অশান্তি চরমে ওঠে। তখন প্রতিবেশী এক ব্যক্তি তাদের ওই বাচ্চা নিয়ে নেওয়ার কথা বলেন। বিনিময়ে সঞ্জয়কে চাঁদপাড়া এলাকায় জমি কিনে বাড়ি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। তাতেই সদ্যজাত সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার ছক কষে সঞ্জয়। আর তাই নিজেদের তথ্য তারা গোপন করার চেষ্টা করছিল।
ঠিক কী বলেছে সঞ্জয়? এই ঘটনার পর সংবাদমাধ্যম বিষয়টি নিয়ে চেপে ধরে। তখন ধৃত এই ব্যক্তি সঞ্জয় বলেন, ‘বাচ্চাটি আমার নয়। বাড়িতে খুব আর্থিক কষ্ট রয়েছে। তাই স্ত্রীকে বলেছিলাম ওই বাচ্চা আমি মানুষ করতে পারব না। বাচ্চা রাখতে হলে আমার বাড়ি থেকে তোমায় চলে যেতে হবে। প্রতিবেশীরা জানার পর ওই বাচ্চা একজনকে দিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। বাচ্চার বিনিময়ে ওরা জায়গা কিনে ঘর করে দেবে বলেছিল। তাই আমি শিশুটিকে দিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম।’