পরপর আসছে করোনায় মৃতদের দেহ। বন্ধ হচ্ছে না বৈদ্যুতিন চুল্লি। তার জেরে চিমনি গরম হয়ে আগুন ধরে গেল চুল্লিতে। মঙ্গলবার এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে কোভিড শ্মশান হিসেবে চিহ্নিত হাওড়ার শিবপুর শ্মশানঘাটে।
ঘটনার জেরে কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ হয়ে যায় শবদাহ। অবশ্য পরে সেটি ঠান্ডা করে ফের দাহকাজ শুরু করা হয়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, একটানা দাহকাজের বিপত্তি ঘটেছে। অত্যধিক মাত্রায় গরম হয়ে গিয়েছিল সেটি। তার ফলেই আগুন ধরে গিয়েছে।
ওই শ্মশানে দু’টি চুল্লি রয়েছে। তার মধ্যে একটি দীর্ঘদিন ধরে খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। অন্য চুল্লিটি দিয়ে এতদিন দাহ কাজ চলছিল। সেটি মঙ্গলবার অত্যাধিক গরম হয়ে যাওয়ায় আগুন ধরে যায়। কিন্তু এই চুল্লিটি খারাপ হয়ে গেলে তো কোভিডে মৃতদের দাহ করার জায়গাই থাকবে না? পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘শিবপুরের আর একটি চুল্লি খুব শীঘ্রই সারিয়ে ফেলার চেষ্টা চলছে। দ্বিতীয়টি কোনও কারণে খারাপ হলে, প্রথমটিতেই ফের কোভিডে মৃতদের দেহ সৎকার করা হবে।’
হাওড়া পুরসভার এক পদস্থ আধিকারিক বললেন, ‘পরিস্থিতি যে এতটা খারাপ হবে, তা আগে বুঝতে পারিনি। প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০টি দেহ আসছে এই শ্মশানে। টানা ২৪ ঘণ্টা ধরে ফারনেস জ্বলছে। সেটি এত গরম হয়ে যাচ্ছে যে, চিমনি গরম হয়ে হালকা আগুনও বেরিয়েছে। তবে ক্ষতি বিশেষ কিছু হয়নি। চিমনি পুরোপুরি ঠিক আছে কিনা তা ইঞ্জিনিয়াররা পরীক্ষা করে দেখবেন।’
উল্লেখ্য, গত বছরই শিবপুর শ্মশানেই করোনায় মৃতদের দেহ সৎকার করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তার পর থেকে শুধু হাওড়ার নয়, কলকাতার করোনায় মৃত বাসিন্দাদের দেহও শিবপুর শ্মশানে দাহ করা হয়েছে।
হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শিবপুর শ্মশানে থাকা দু’টি চুল্লির মধ্যে একটি নন—কোভিড দেহের সৎকারের জন্য বরাদ্দ করা হয়ছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়। কারণ, এই এলাকার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শ্মশান বাঁশতলাঘাট গত দেড় বছর ধরে বন্ধ। তাই হাওড়ার বাসিন্দাদের কাছে সালকিয়ার বাঁধাঘাটের শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লিই নন-কোভিড দেহ সৎকারের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে, শিবপুরই করোনায় মৃতদের দেহ সৎকারের জন্য এখন একমাত্র শ্মশান হওয়ায়, শুধু হাওড়া নয়, কলকাতার দেহগুলিও মাঝে মাঝে এখানে নিয়ে এসে দাহ করা হচ্ছে। ওই শ্মশানের এক কর্মী জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে মৃতদেহের চাপে চুল্লি বন্ধ রাখা যায়নি। তার ফলেই চুল্লির ভিতরে থাকা ফারনেস গরম হয়ে গিয়ে বিপত্তি ঘটে।