দোকানের বাইরে এত ভিড় কেন? এটাই একটা সন্দেহ তৈরি করেছিল। দোকানের মুখে পাহারাদারের মতো বসে খরিদ্দার সামলাচ্ছিলেন দোকানদার নিজেই। এই অবস্থায় দুটি যুবক এসে কানে কি যেন বলল! তখন দোকানদার একটু ফাঁকা করে দিল জায়গাটি। মাঝে মাঝে ফোন আসছে। ধরে বলছেন মাল পৌঁছে যাবে। কি মাল? কোথায় পৌঁছবে? নজর রাখতেই ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়ল।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, কালীপুজোয় সব ধরণের বাজি পোড়ানো বা বিক্রি করা বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে নিষিদ্ধ বাজি এভাবেই বিক্রি হয়ে চলেছে। এমনকী ফোনে যে মাল পৌঁছে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে তা আসলে নিষিদ্ধ বাজিই। নবদ্বীপ, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, তেহট্ট, করিমপুর–সহ জেলার নানা প্রান্তে এভাবেই মাল পৌঁছে যাচ্ছে। পুলিশ অনেকটা বাজেয়াপ্ত বা ধরপাকড় করতে পারলেও পুরোপুরি এই বিক্রি বন্ধ করতে পারেনি।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাজি বিক্রেতা বলেন, ‘এই তো ক’দিনের ব্যবসা। করোনাভাইরাসের জেরে মন্দা চলছিল। পেট চালাতে হবে তো। এমন নির্দেশ দিলেই হল। আমাদের কথা তো ভাবতে হবে।’ বাজি আগে থেকেই তোলা হয়েছিল। আর তা বিক্রি করতে না পারলে সব জলে যাবে। তাই বিকল্প পথ হিসাবে চোরাগোপ্তা বিক্রি শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি জেলা পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় হানা দিচ্ছে। বিপুল পরিমাণ বাজি উদ্ধার হয়েছে। চাকদহের পালপাড়া বাজার, নাকাশিপাড়া, কল্যাণী থেকে একাধিক ব্যবসায়ীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। কিন্তু এই চোরাগোপ্তা বাজি বিক্রি বন্ধ করতে পারেনি। দোকানদারকে ফোনে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘চিন্তা করবেন না, মাল পৌঁছে যাবে।’ এখন অনেকে রসিকতা করে বলছেন, এটা আসলে দুয়ারে বাজি। আর নদিয়ার ডিএসপি (ডি অ্যান্ড টি) শুভাশিস চৌধুরী বলেন, ‘বাজির বিরুদ্ধে সব জায়গায় পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।’