মেদিনীপুরের প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশকে সতর্ক করেছিলেন। ঝাড়খণ্ড সীমান্ত থেকে অস্ত্র ঢুকছে বলে পুলিশকে নাকা চেকিং বাড়াতে বলেছিলেন। এবার ঝাড়খণ্ডের কামারশালায় তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র সীমানা পেরিয়ে এই রাজ্যে ঢুকছে বলে খবর মিলল। আগে বাসে বা ট্রেনে করে আগ্নেয়াস্ত্র আসত। এখন কৌশল বদলে গ্রামের মেঠো রাস্তা ধরে মোটরবাইক চালিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে। অস্ত্র–সহ দু’জনকে গ্রেফতার করে এই তথ্য পেয়েছে রামপুরহাট থানার পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে একজন ডায়মণ্ডহারবারের মগরাহাট থানার কামদেবপুরের কুখ্যাত দুষ্কৃতী।
ঠিক কী খবর মিলছে? সূত্রের খবর, বিহারের মুঙ্গের থেকে বাংলায় অস্ত্র আমদানি হয়ে এখানে আসছে। তাই দুই রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকায় পুলিশ আগের থেকে নজরদারি বাড়িয়েছে। তাই এখন এসব অস্ত্রের ব্যবসায়ীরা বদলেছে কৌশল। অন্যান্য জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি ঝাড়খণ্ড সীমান্ত ঘেঁষা এলাকা রয়েছে বীরভূমে। সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র কারবারিরা। কারণ, এখানের বিস্তীর্ণ এলাকা ফাঁকা। কোথাও জঙ্গল, কোথাও আবার ঘেঁষাঘেঁষি গ্রাম।
কী তথ্য পেয়েছে পুলিশ? পুলিশ সূত্রে খবর, ঝাড়খণ্ড থেকে দু’জন মোটরবাইকে করে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এখানে আসে। তখন ঝাড়খণ্ড সীমানায় পুলিশ নজরদারি বাড়ানো হয়। দাদপুর স্বাধীনপুর ক্যানেলপাড়ের রাস্তা ধরে এই কারবারীরা তখন রামপুরহাট যাচ্ছিল। সেখানেই তাদের আটক করে পুলিশ। তাদের কাছে থাকা একটি ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় একটি পাইপগান ও এক রাউণ্ড কার্তুজ। গ্রেফতার করা হয় মগরাহাটের সাবির মণ্ডল ও রামপুরহাটের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভাগারপাড়ার সানু শেখকে। সাবির মগরাহাট এলাকার কুখ্যাত ছিনতাইবাজ। সানু ওই এলাকায় কাজ করতে গিয়ে সাবিরের সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপরই সানুর হাত ধরে রামপুরহাট থানা এলাকায় থাকতে শুরু করে। ঝাড়খণ্ড থেকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আসছিল তারা। এই দলে আরও দু’জন রয়েছে। তাদের খোঁজ শুরু হয়েছে। এই ঘটনাই মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কায় সিলমোহর ফেলে দেয়। তাতে আরও সতর্ক হয় পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ১৪ মে রামপুরহাট শহরের শ্রীফলা মোড় থেকে একটি দেশি পাইপগান ও একটি কার্তুজ–সহ গাজল শেখ নামে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়। আবার বগটুইয়ের দুই ছিনতাইবাজকে আগ্নেয়াস্ত্র–সহ গ্রেফতার করা হয়। মুঙ্গের থেকেই পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ হলেও রাজ্যের সীমানা ঘেঁষা ঝাড়খণ্ডেও অস্ত্রকারবারীদের ডেরা রয়েছে। ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন কামারশালায় তৈরি হয় পাইপগান। মুঙ্গেরের তুলনায় ঝাড়খণ্ডে তৈরি আগ্নেয়াস্ত্রের দাম কম হওয়ায় চাহিদা বেড়েছে।