বেলগাছিয়া ভাগাড়ে বিপর্যয়ের পর থেকেই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। ইতিমধ্যেই বহু মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তারপরেও আতঙ্ক কাটছে না। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা ভাগাড় না সরানো হলে আগামী দিনে আরও বড় বিপর্যয় হতে পারে। এই অবস্থায় আজ সোমবার বেলগাছিয়া ভাগাড় বা ডাম্পিং গ্রাউন্ড পরিদর্শন করলেন পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। দফতরের তরফে আজ দিনভর ভাগাড়ে সমীক্ষা করা হয়। আগামীকাল দফতরের বৈঠকে ভাগাড় সরিয়ে পুনর্বাসন নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানালেন ফিরহাদ হাকিম।
আরও পড়ুন: মাটির সহনক্ষমতার বাইরে বর্জ্য, বেলগাছিয়া ভাগাড় নিয়ে বিপদের আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের
এই এলাকা থেকে ভাগাড় আগেই সরাতে বলা হয়েছিল। তবে বিপর্যয় হওয়ার পর থেকেই ভাগাড় সরানোর জন্য তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এখানকার মাটি একেবারেই ব্যবহারযোগ্য নয়। ভাগাড়ে দীর্ঘদিন ধরে বর্জ্য জমা হওয়ার ফলে তা মাটির ধারণ ক্ষমতার বাইরে চলে গিয়েছে। আজ সোমবার সারাদিন জুড়ে ওই এলাকায় সমীক্ষা করা হয়। ভাগাড় সরানোর বিষয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘এই পুরো অঞ্চলটাই ভাগাড়। এখানে মাটি নেই বললেই চলে। তবে বহু মানুষ এখানে অবৈধভাবে বসতি গড়ে তুলেছিলেন। এখন তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। এরজন্য খালি জমি চিহ্নিত করা হবে।
এবিষয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার গ্রাম বা শহরের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ করছে না। তাই রাজ্য সরকার নিজেদের তহবিল থেকেই এই অর্থের ব্যবস্থা করবে। ভাগাড়ের অবস্থা প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, এখানকার মাটি একেবারে অযোগ্য হয়ে গিয়েছে। মাটি আলগা হয়ে যাচ্ছে আবার কিছু জায়গায় ভেঙেও পড়ছে। ওই জমির উপর চাপ বেড়ে যাচ্ছে। তাই যতটা দ্রুত সম্ভব প্রসেসিংয়ের কাজ শুরু করতে হবে।
কেএমডিএ-র সূত্রে জানা গিয়েছে, বিপজ্জনক অঞ্চলগুলিতে শিট পাইলিংয়ের কাজ শুরু করা হবে। জমা বর্জ্য ট্রাকে করে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে প্রসেসিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। এরফলে যে জায়গা ফাঁকা হবে সেখানে আগামী দুমাসের মধ্যে প্রসেসিং ইউনিট গড়ে তোলা হবে। ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের কাজ কেএমডিএ কাল থেকেই শুরু করবে।
ফিরহাদ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, একেবারেই সময় নষ্ট করা যাবে না। নগরন্নয়ন দফতর এবং কেএমডিএর তরফে যৌথভাবে পোর্টেবল কম্প্যাক্টর বসানো হবে। শহরের বিভিন্ন ফাঁকা জায়গা চিহ্নিত করে এই বর্জ্য দ্রুত প্রসেসিং এবং পুনর্বাসন দুই-ই শুরু করা হবে। ফিরহাদ জানিয়েছেন, পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ২-৩ বছর সময় লাগবে। বায়ো-মাইনিং পদ্ধতির মাধ্যমে দ্রুত ভাগাড় সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলবে। এছাড়া, ভাগাড়ে মিথেন গ্যাস নির্গমন বন্ধ করতে পুরো এলাকা পরিষ্কার করে ফেলা হবে জানান ফিরহাদ। তাঁর কথায়, ‘আমরা জাদু করতে পারি না, সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে কয়েক বছর সময় লেগে যাবে।’