নদীতে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে আবারও বাঘের আক্রমণে বেঘোরে প্রাণ হারালেন এক মৎস্যজীবী। গত ছ'দিনের মধ্যে বাঘের হামলায় এই নিয়ে দু’জন মৎস্যজীবীর মৃত্যু হল।
এবার ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবন কোস্টাল থানা এলাকার মোল্লাখালির নদীতে। এমনিতেই কার্যত লকডাউন তার ওপরে ইয়াসের ধাক্কায় সুন্দরবনের বেশিরভাগ উপকূলীয় এলাকার বাঁধ ভেঙে বেশিরভাগ গ্রাম জলের তলায় চলে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এলাকায় কাজ পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে মৎস্যজীবীদের কাছে। পেটের দায় বাধ্য হয়েই কাঁকড়া ধরতে নদীতে যাচ্ছেন তাঁরা। তবে অভিযোগও উঠছে এক্ষেত্রে অনেক সময় বন দফতরের অনুমতি না নিয়েই গভীর জঙ্গলে ঢুকে পড়ছেন একশ্রেণির মৎস্যজীবী। সেক্ষেত্রে কোনও কারণে মৎস্যজীবী মৃত্যু হলে সরকারি ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে অনেক মৃতের পরিবারকে।
রবিবার সকালে ওই এলাকারই কালিদাসপুরের বাসিন্দা আনন্দ ধর তাঁর ছেলে ও প্রতিবেশী এক ব্যক্তিকে নিয়ে নদীতে কাঁকড়া ধরতে যান। নদীতে নেমে কাঁকড়া ধরছিলেন তাঁরা। কিন্তু কেউই টের পারেননি কখন তাঁদের জন্যে বিপদ ওঁত পেতে বসে রয়েছে। চোখের নিমেষে পূর্ণ বয়স্ক একটি বাঘ আনন্দবাবুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে ওই বাঘটি আনন্দবাবুকে আঁচড়ে-কাঁমড়ে ক্ষতবিক্ষত করে দেয়। এর পর বাঘটি তাঁকে টেনে-হিঁচড়ে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া চেষ্টা করে। মৎসজীবীর উপর হামলা হতে দেখে হতচকিত হয়ে পড়েন তাঁর ছেলে ও সঙ্গী। ঘটনার রেশ কাটিয়ে তারাও লাঠিসোটা নিয়ে আনন্দবাবুকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কোনওরকমে বাঘের মুখ থেকে ছাড়িয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় আনন্দকে গ্রামে নিয়ে আসেন তাঁরা। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। কয়েকঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হয় ওই মৎসজীবীর। ঘটনায় মোল্লাখালিতে শোকের ছায়া নেমে আসে।
এর আগে গত সোমবারেও বাঘের আক্রমণে এক মহিলা মৎসজীবীর মৃত্যু হয়। গোসাবার সাতজেলিয়া চরঘেরি এলাকা থেকে ঝিলার জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে প্রাণ হারান তিনি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী ও আরেক সঙ্গী। কাঁকড়া খুঁজতে খুঁজতে চলে যান খালের ভিতরের দিকে। তখনই বাঘের আক্রমণের মুখে পড়ে মৃত্যু হয় তাঁর।