গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে এমনিতেই বিপদসীমার উপর বইছে একাধিক নদী। তারওপর ডিভিস থেকে জল ছাড়ায় প্লাবিত হয়েছে বাংলার বহু এলাকা। বুধবার ভোরে কংসাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে পাঁশকুড়া পুরসভার একাধিক এলাকা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চাঁপাডালি, গড় পুরুষোত্তমপুর, বালিডাংরি এলাকা। এই অবস্থায় বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারকাজে নেমে পড়েছে প্রশাসন। তবে সেই উদ্ধারকাজ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করলেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, ধীর গতিতে চলছে উদ্ধারকার্য। ফলে বহু মানুষ বিপাকে পড়েছেন। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে এদিন পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন পাঁশকুড়ার বন্যা কবলিত মানুষজন।
আরও পড়ুন: ‘এটা ম্যান মেড বন্যা’, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী
স্থানীয়রা জানান, পাঁশকুড়ার গড় পুরুষোত্তমপুরে নিচু এলাকায় বন্যার কারণে বহু মানুষ আটকে পড়েন। তাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করছে এনডিআরএফ এবং জেলা পুলিশ। তবে অভিযোগ, মাত্র দুটি বোটে করেই উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। এরফলে একে একে বন্যা কবলিতদের উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে আনতে দীর্ঘ সময় লাগছে। এনিয়ে এদিন প্রশাসনের ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা।
তারা দাবি করেন, আরও বেশি সংখ্যায় বোট উদ্ধারকাজের জন্য নামাতে হবে। এই দাবিকে কেন্দ্র করেই এদিন পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। তারা পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠলে সেখানে পৌঁছন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার নিখিল আগরওয়াল এবং তমলুক মহকুমা পুলিশ আধিকারিক আফজল এবরার। তাঁদেরকে ঘিরেও বিক্ষোভ করেন বন্যা কবলিতরা। পরে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেন অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার ভোরে পাঁশকুড়া পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত কংসাবতী নদীবাঁধ আচমকা ভেঙে হুহু করে জল ঢুকতে শুরু করে। এর জেরে একে একে পাঁশকুড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়। তবে প্রশাসনের দাবি, জলের ব্যাপক গতি থাকায় নদীবাঁধে প্রতিরোধের বন্দোবস্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে এর জন্য প্রশাসনকেই দায়ী করেন স্থানীয়রা। যদিও জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বিস্তীর্ণ নদীবাঁধের একাধিক দুর্বল এলাকা চিহ্নিত করে রাতভর যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামতির কাজ চলার পরেও এমন ঘটনা। এর আগে একটানা ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। তারইমধ্যে কংসাবতীর বাঁধ ভেঙে পড়ায় তীব্র সমস্যায় পড়েন স্থানীয়রা। পুরসভার পাশাপাশি পঞ্চায়েত এলাকাগুলিও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছে।