খাবারে মেশানো হচ্ছে কাপড় রং করার বিষাক্ত রাসায়নিক। কোথাও আবার মজুত পচা, বাসি খাবার। সেগুলিই বিক্রি করা হচ্ছে গ্রাহকদের। এমনই অভিযোগ পেয়ে খাবারের দোকানগুলিতে হানা দেন খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিকরা। দোকানে এই ধরনের অস্বাস্থ্যকর খাবার দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে যান আধিকারিকরা। অস্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রি করায় শাস্তি দেওয়া হল দোকানদারদের। সকলের সামনেই দোকানদারকে কান ধরিয়ে ওঠবস করালেন খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিকরা। একইসঙ্গে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সে বিষয়ে তাঁরা দোকানদারদের সতর্ক করেছেন। খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিকদের এমনই নজিরবিহীন শাস্তি দিতে দেখা গেল বীরভূমের আহমেদপুরে। এছাড়াও, এদিন অভিযান চালিয়ে প্রচুর অস্বাস্থ্যকর খাবার নষ্ট করে খাদ্য সুরক্ষা দফতর।
আরও পড়ুন: বহু হোটেল, রেস্তোরাঁয় রান্না করা খাবারে ভেজাল, সাড়ে ১৩ লাখ জরিমানা করল পুরসভা
জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আহমদপুরের বিভিন্ন দোকানে হানা দেন রাজ্য সরকারের খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিকরা। তার মধ্যে রয়েছে মিষ্টির দোকান, বিরিয়ানির দোকান, হোটেল, মুদির দোকান প্রভৃতি। অনেক দোকানেই পচা, বাসি খাবার দেখতে পেয়েছেন আধিকারিকরা। এছাড়াও, খাবারে কাপড় রং করার রাসায়নিক ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযানে জানতে পারে দফতর। সেই অপরাধেই এদিন সকলের সামনে বেশ কয়েকজনকে কান ধরে ওঠবস করানো হয়। সেই সময় একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘ভুল হয়ে গিয়েছে আর হবে না।’
জানা গিয়েছে, একটি বিরিয়ানির দোকানে বাসি মাংস মজুত করা হয়েছিল। সেগুলি ফেলে দেন আধিকারিকরা। পাশাপাশি একটি মিষ্টির দোকানের বাসি মিষ্টিও ফেলে দেওয়া হয়। বেশ কয়েকটি দোকানে থাকা বাসি শিঙাড়া, জিলিপিও ফেলে দেওয়া হয়। এরসঙ্গে যাঁদের লাইসেন্স নেই, তাঁদের লাইসেন্স করানোর ক্ষেত্রে কয়েকদিন সময় দেওয়া হয়েছে। না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আধিকারিকরা। অলোক দাস নামে এক ব্যবসায়ী ভুল স্বীকার করে জানান, তিনি আগে জানতেন না এই রং ক্ষতিকারক। জানলে ব্যবহার করতেন না। এবার সতর্ক করার পর থেকে আর তিনি রং ব্যবহার করবেন না বলে তিনি জানান।
বীরভূম এবং রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার খাদ্য সুরক্ষা বিভাগের আধিকারিক ডক্টর প্রসেনজিৎ বটব্যাল বলেন, ‘আমরা এদিন খাবারে দোকান থেকে শুরু করে মুদির দোকানে অভিযান চালাই। সেখানে দেখা যায় অনেকের লাইসেন্স নেই, আবার অনেক ক্ষেত্রেই অস্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রি করা হচ্ছে। যাদের লাইসেন্স নেই তাদের সময় দেওয়া হয়েছে।’ তিনি জানান, বেশ কিছু মিষ্টির দোকানে মিষ্টি, জিলিপি, শিঙাড়া বাসি এবং পচা পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি ফেলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, বেশ কিছু বিরিয়ানি দোকানে মুরগির মাংস অনেকদিন ধরে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিল। যেগুলি স্বাস্থের পক্ষে ক্ষতিকার। সেগুলিও ফেলে দেওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, যে ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স তৈরির ক্ষেত্রে একটি দুষ্টচক্র কাজ করছে। সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের ভুল বুঝিয়ে ১০০ টাকায় একটি রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর সেটা নিয়ে তাঁরা অবৈধভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লাইসেন্স নেই। তাঁদের ফোন নম্বর নেওয়া হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে লাইসেন্স না করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।